অনিদিষ্টকালের জন্য ইট বিক্রয় বন্ধ, থেমে নেই ইট তৈরি

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ রাউজানে অনিদিষ্টকালের জন্য ইট বিক্রয় বন্ধ হলে ও ইটের ভাটায় তৈয়ারী করা হচ্ছে ইট, ইট বিক্রয় বন্ধ করায় সহস্রাধিক ট্রাক শ্রমিক ও ট্রাকে ইট উত্তোলন ও ইট নামানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিক বেকারত্ব জীবন যাপন করছে । বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪শত ১৮টি ইট ভাটার মধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে কয়েক দফা অভিযানে কিছু ১শত ২টি অবৈধ ইটের ভাটা ধংস করা করে ও কিছু সংখ্যক ইটের ভাটা থেকে জরিমানা আদায় করে পরিবেশ অধিদপ্তর । অবশিষ্ট ইটের ভাটা উচ্ছেদ অভিযানের সময় চেয়ে ও সময় না দেওয়ায়, বৃহত্তর চট্টগ্রামে ইট ভাটা মালিক সমিতি গত ২৬ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার থেকে ইটের ভাটা থেকে উৎপাদিত ইট বিক্রয় বন্দ্ব করে দিয়েছে । রাউজানে ৫১ টি ইটের ভাটার মধ্যে দু দপে অভিযানে ৫টি ইটের ভাটা সম্পুর্নভাবে ধংস ও দুটিইটের ভাটা থেকে জরিমানা আদায় করে। ৫টি ইটের ভাটা সম্পুণভাবে ধংস করার পর ৪৪টি ইটের ভাটায় ইট তৈয়ারীর কাজ চলছে । ৪৪টি ইটের ভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান থেকে রক্ষা করতে ইটের ভাটার মালিকেরা সময় চেয়ে সময় না পেয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ইট ভাটা মালিক সমিতির ডাকে আন্দোলনে নেমেছে । আন্দোলনের প্রথম কর্মসুচি হিসাবে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার থেকে ইঠের ভাটার মালিকেরা ইটের ভাটা থেকে ইট বিক্রয় করা বন্দ্ব করে দিয়েছে । ইট বিক্রয় বন্দ্ব করা হলে ও ৪৪টি ইটের ভাটায় পুরোদমে চলছে ইট তৈয়ারীর কাজ । ইট বিক্রয় বন্দ্ব করে দেওয়ায় প্রতিদিন ইট পরিবহনকারী রাউজানের দইশত ট্রাক, অর্ধশতাধিক জীপ বসে রয়েছে । ইটের ভাটা থেকে ইট পরিবহনকারী রাউজান ঢালার মুখ এলাকার বাসিন্দ্বা ট্রাক চালক আবদুল শুক্কুর বলেন, রাউজানে দুই শত ট্রাক প্রতিদিন ইটের ভাটা থেকে বিক্রয় করা ইট পরিবহন করেন। প্রতিটি ট্রাকে একজন চালক, একজন হেলপার, প্রতিটি ট্রাকে ৪ জন শ্রমিক ইট উত্তোলন ও ট্রাক থেকে ইট নামানোর কাজ করেন । প্রতিটি ট্রাকে ৬জন করে ২শতটি ট্রাকে ১ হাজার ২শত জন শ্রমিক কাজ করেন। ইটের ভাটা থেকে ইট বিক্রয় বন্দ্ব করে দেওয়ায় ১ হাজার ২শত জন শ্রমিক বেকারত্ব জীবন যাপন করছেন । ১হাজার ২শত জন শ্রমিকের আয়ের পথ বন্দ্ব হয়ে যাওয়ায় তাদের পরিবার পরিজন অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন । রাউজান উপজেলার বৃকবানপুর এলাকার ইটের ভাটার মালিক আলাউদ্দিন বলেন, ইটের ভাটা গড়তে বিপুল পরিমান টাকা ঋন নিয়ে ইটের ভাটা গড়েছি । ইট তৈয়ারী করার পর ইটের ভাটা থেকে উৎপাদিত ইট বিক্রয় করে ঋনের টাকা শোধ করার পুর্বে ইটের ভাটা ধংস করে দিলে ইটের ভাটার মালিকগন ঋনের টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে আর্ত্নহত্যার পথ বেছে নেওয়া ছাড়া কোন পথ নেই। প্রতিটি ইটের ভাটায় কাজ করে ২শত জন শ্রমিক । ইটের ভাটা বন্দ্ব হয়ে গেলে রাউজানে ১০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করবেন। ইটের ভাটার মালিক আলাউদ্দিন বলেন, ইট ভাটা ধংস করার পুর্বে ইটের ভাটার মালিকদের সময় দেওয়া, ইটের ভাটাকে শিল্প কারখানা হিসাবে মর্যদা প্রদান দেওয়ার দাবীতে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ইট ভাটা মালিক সমিতির ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনের প্রথম ধাপ হিসাবে ইটের ভাটা থেকে ইট বিক্রয় বন্দ্ব করে দেওয়া হয়েছে । ইটের ভাটার মালিক জয়নাল আবেদীন জানান, বৃহত্তর চট্টগ্রামে ইটের ভাটা থেকে প্রতি বৎসর সরকার ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ভ্যাট পাচ্ছে। হঠাৎ করে ইটের ভাটা ধংস করে দিয়ে সরকারের সড়ক ও বিভিন্ন প্রতিষ্টানের উন্নয়ন কাজ ও বন্দ্ব হয়ে যাবে ইটের অভাবে । গতকাল ২৭ ফেব্রুয়ারী শনিবার দুপুরে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ইট ভাটা মালিক সমিতির উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করা হয় । সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ইট ভাটা মালিক সমিতির ঘোষিত কর্মসুচির প্রতি সর্মথন জানিয়ে রাউজান ইট ভাটা গন সংবাদ সম্মেলনে অংশ গ্রহন করেন বলে জানান ইট ভাটার মালিক শহিদুল্ল্যাহ রনি । রাউজানের হলদিয়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ী এলাকা বৃকবানপুর, বৃন্দ্ববনপুর, ডাবুয়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ী এলাকা মেলুয়া, কলমপতি, রাউজান পৌরসভার জঙ্গল রাউজান, পুব্র্ রাউজান. ওয়াহেদের খীল, আইলী খীল, ৭ নং রাউজান ইউনিয়নের পুর্ব রাউজান, মুখছড়ি, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মোকামী পাড়া, উরকিরচর ইউনিয়নের হারপাড়া, পশ্চিম আবুর খীল এলাকায় হালদা নদীর তীরে ইটের ভাটা রয়েছে । এ ব্যাপারে রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন,পরিবেশ অধিদপ্তরের সহায়তায় রাউজানে ইটের ভাটায় অভিযান চালানো হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশ ও সরকারের নির্দেশ পালন করা আমাদের দায়িত্ব ।