মৌসুমী ফলে বাজার সয়লাব: ক্রেতা শূন্য কাপ্তাইয়

নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই:
কাপ্তাই উপজেলা সদরের ফল বিক্রেতা মোঃ দুলাল টানা একযুগের বেশি সময় ধরে ফলের ব্যবসা করছেন। বিশেষ করে জৈষ্ঠ্য মাস অথাৎ মধুমাসে তার দম ফেলার সময় থাকেনা। আম, লিচু, কাঠাল, আনারস এসব মৌসুমী ফল কেনার জন্য ক্রেতার উপচে পড়া ভীড় থাকে তার দোকানে। প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকার ফল বিক্রি করতেন তিনি। কাপ্তাইয়ে বেড়াতে আসা প্রচুর পর্যটক এসব ফল কিনে নিতো। কিন্ত এবারের মধুমাসে তার মুখে হাসি নেই । করোনা ভাইরাসের কারনে প্রচুর মৌসুমী ফল থাকা সত্ত্বেও বিক্রি নেই।
গত বৃহস্পতিবার কাপ্তাই উপজেলা সদর বড়ইছড়িতে মৌসুমী ফল বিক্রেতা মোঃ দুলাল, মোঃ লিটন, বেলাল, মহিউদ্দিনসহ আরো কয়েকজনের সাথে কথা হয়। তারা জানান, এবছর রুপালী, আম্রপালী, রাংঙ্গুই এবং মল্লিকা জাতের আমের ব্যাপক ফলন হয়েছে কাপ্তাইয়ে। এছাড়া আনারস, কাঠাল, লিচুসহ নানা মৌসুমী ফলে ভরপুর হয়ে আছে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন হাটবাজার। তবে গত বছরের তুলনায় দাম কম এবং ক্রেতা- সাধদারণের উপস্থিতি কম হওয়ায় তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তারা আরো জানান, গতবছর যেখানে এসব আম জাত ভেদে ৮০ থেকে ১শ’ টাকা দরে কেজি বিক্রি করেছে,এবার সেসব আমের প্রতিকেজির দাম ৪০-৫০ টাকা। আবার যে সব আম ৫০ টাকা দামে বিক্রি করেছে এবার তা ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ এবং পর্যটক না আসায় এমনটি হয়েছে বলে বিক্রেতারা জানান।
এদিকে, কাপ্তাইয়ের তালুকদার সবুজ খামারের প্রোপাইটার ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুন তালুকদার জানান, প্রতিবছরের মতো এবছরও তার বাগানের প্রায়২০ একর জমিতে আম্রপালি এবং রাঙ্গুই জাতের আমের চাষ করা হয়েছে। গতবছর হতে আম্রপালি জাতের আমের ফলন এবছর কম হলেও রাঙ্গুই জাতের আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাসের এবং পর্যটক না আসায় এবছর আশানুরুপ দাম পাওয়া যাচ্ছেনা।কৃষক আপাই মারমা, অজিত তালুকদারসহ স্থানীয় কয়েক কৃষক জানান, এবছর করোনার দৌরাত্মে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সামসুল আলম চৌধুরী জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে এবছর কাপ্তাইয়ে মৌসুমী ফলের আশানুরুপ উৎপাদন হয়েছে। প্রত্যেকটি গাছে পোকা-মাকড়ের আক্রমন ছাড়া কৃষকরা আম,কাঠাল, আনারস, লিচুসহ নানা ফলের উৎপাদন করেছেন। তবে করোনা ভাইরাসের কারনে সীমিত আকারে যানবাহন চলাচলসহ স্থানীয় ভাবে ক্রেতা আগমণ কম এবং পর্যটকের আনাগোনা কমে যাওয়ায়
এবছর কৃষকরা আশানুরুপ দাম পাচ্ছেন না বলে এই কৃষি কর্মকর্তা জানান।এতে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছে।