বিপ্লব আসতে চলেছে ডাবল ডেকার বিমানের ধারণায়

বিমান ভ্রমণে বিপ্লব আনতে চলেছে ডাবল ডেকার বিমানের ধারণা। আলেজান্দ্রো নুনেজ ভিসেন্টের চেইজ লঙ্গি এরোপ্লেন সিটের ধারণাটি অন্তত সেদিকেই ইঙ্গিত করছে। ২১ বছর বয়সী আলেজান্দ্রো কলেজের প্রজেক্ট হিসেবে গত বছর ছোট আকারে প্রকল্পটি শুরু করেন। আলেজান্দ্রোর ডিজাইনটি এখন অনলাইন মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি ২০২১ সালের ক্রিস্টাল কেবিন পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে তার ডিজাইন। নুনেজ ভিসেন্ট বিমান চালনার জগতে আলোড়ন তৈরি করেছেন। নিজের স্বপ্নের প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করার জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ছেড়ে দিয়েছেন আলেজান্দ্রো। তিনি নামীদামি এয়ারলাইন্স এবং বিমানের সিট নির্মাণকারী সংস্থাগুলির সাথে আলোচনা করছেন।প্রকল্পটিকে বিকাশের জন্য কিছু মোটা বিনিয়োগও পেয়েছেন তিনি। কেউ কেউ নুনেজ ভিসেন্টের উদ্ভাবনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, অন্যরা ক্লাস্ট্রোফোবিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ তারা মনে করেন একটি সিটের নিচে আরেকটি সিট বিমানের বর্তমান সেট-আপের চেয়ে খারাপ হবে।

জার্মানির হামবুর্গে সিএনএন ট্র্যাভেলের সাথে কথা বলতে গিয়ে নুনেজ ভিসেন্টে বলেছেন, “আমি সমালোচকদের থেকে খারাপ মন্তব্যগুলো শোনার পর বিমানের ডিজাইন নিয়ে নানা ভাবনা চিন্তা করছি । কারণ ডিজাইনটি দৈনন্দিন ভ্রমণকারীদের জন্য, তাই আমি মনে করি ইতিবাচক বা নেতিবাচক সব মন্তব্যই শোনা দরকার । আমার উদ্দেশ্য হল ইকোনমি ক্লাসের আসন পরিবর্তন করা, কারণ যাত্রীরা অনেক বেশি দাম দিয়ে এই সিটের টিকিট কাটেন । ” AIX হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় এভিয়েশন শোগুলির মধ্যে একটি, সেখানে ডাক পেয়েছেন ভিসেন্ট। তুলে ধরবেন নিজের ডিজাইনের খুঁটিনাটি। ডাবল ডেকার বিমানের সিটে উড়তে যাওয়ার মজা কেমন হতে পারে তার স্বাদ পেতে সিএনএন ট্রাভেল -ও পৌঁছে গিয়েছিল। ভ্রমণকারীদের জন্য বিমানে দুটি সিঁড়ির মতো ধাপ ডিজাইন করেছেন নুনেজ। আসনগুলি বেশ প্রশস্ত এবং আরামদায়ক বোধ। পা প্রসারিত করার জন্য প্রচুর জায়গা রয়েছে। আসনগুলি যদিও নড়াচড়া করে না, তবে হেলান দেবার জন্য প্রতিটি সিটে আলাদা সেট আপ করা হয়েছে।নুনেজ ভিসেন্টের ডিজাইনে ওভারহেড কেবিন নেই। পরিবর্তে, তিনি ভ্রমণকারীদের লাগেজ রাখার জন্য কেবিনের উপরের এবং নীচের স্তরের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থান রেখেছেন । উপরের এবং নিচের সিটের মধ্যে ব্যবধান ১.৫ মিটার। তবে ভ্ৰমণকারীদের মধ্যে কারোর উচ্চতা বেশি হলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ এখানে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর কোনো জায়গা নেই। তবে সিট থেকে সামনের দিকে পা প্রসারিত করার এবং বিশ্রাম নেয়ার ব্যবস্থা পুরো ব্যবস্থা ভিসেন্ট তার ডিজাইনে রেখেছেন। যদি কেউ ভাবেন বিমান যাত্রার সময়টা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেবেন তাহলে তাদের জন্য ডাবল ডেকার বিমানের সিট বেশ উপযোগী। চেইস লঙ্গি আসনটি প্রাথমিকভাবে ফ্লাইং-ভি বিমানের জন্য পরিকল্পিত হয়েছিল, যা উদ্ভাবন করেছে ডেলফ্ট ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি। এখন এই নকশাটি বোয়িং 747, এয়ারবাস A -330 বা অন্য কোনও মাঝারি থেকে বড় ওয়াইড-বডি বিমানে প্রয়োগ করা যেতে পারে। নুনেজ ভিসেন্টে উচ্চাকাঙ্খী এবং আত্মবিশ্বাসী যে তার নকশা বাস্তবে পরিণত হতে পারে। তিনি তাঁর প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করার জন্য কোনো বড় এয়ারলাইন সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চাইছেন। ছেলের ওপর অগাধ আস্থা রাখছেন আলেজান্দ্রোর বাবা -মা। কারণ তাদের সহযোগিতায় নিজের শোয়ার ঘর থেকে যে প্রকল্পকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন আলেজান্দ্রো নুনেজ ভিসেন্ট সেই প্রকল্প এখন ডানা মেলে ওড়ার অপেক্ষায়।
সূত্র : edition.cnn.com