চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর একান্ত আগ্রহ ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুুুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ‘বই বই এবং বই-ই দেখাবে পথ’ স্লোগানকে ধারণ করে প্রথম বারের মতো চবি’র শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে ২৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখ থেকে ৫দিন ব্যাপি ‘বঙ্গবন্ধু বই মেলা ২০১৯’ শুরু হয়েছে। সকাল ১০ টায় মাননীয় উপাচার্য প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বঙ্গবন্ধু চেয়ার (বঙ্গবন্ধু গবেষণা কেন্দ্র), চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, চট্টগ্রাম-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত বই মেলায় ভাষণ দেন এবং এ বই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত গবেষক ও চবি যাদুঘরের কিউরেটর প্রফেসর ড. ভূঁইয়া ইকবাল। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথিবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ, জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শংকর লাল সাহা।
মাননীয় উপাচার্য তাঁর ভাষণে মহাকালের মহানায়ক স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি রাজনীতির মহাকবি সোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিন¤্রচিত্তে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ত্রিশলক্ষ শহীদ, জাতীয় চার নেতা ও ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট বর্বর হায়েনাদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যবৃন্দকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত দু’লক্ষ জায়া-জননী-কন্যার প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন যে মহান নায়কের জন্ম না হলে পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম হতোনা সেই মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী দেশ-জাতি তথা দেশের সকল আপামর জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব, গৌরবময় ও তাৎপর্যপূর্ণ। এই মহান নেতার জীবন দর্শন, বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভূমি ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশের পূনর্গঠন এবং ৭৫’র পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে যে কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল তার ইতিহাস আমাদের নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে। মাননীয় উপাচার্য আরও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চাকে সমুন্নত রাখতে শিক্ষার্থীদের বইপড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উৎসাহিত করাসহ দেশের গবেষণা-প্রকাশনা শিল্পের বিকাশে এ ধরনের উদ্যোগ ও আয়োজনতরুণ প্রজন্মের মেধা-মনন বিকাশে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, বই পড়া ব্যতিত জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়; তাই আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি অধিকতর আগ্রহ সৃষ্টিতে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়মিতভাবে এ ধরণের বই মেলার আয়োজন অত্যন্ত জরুরী। মাননীয় উপাচার্য আমাদের মেধাবী তরুণ শিক্ষার্থীদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে দেশপ্রেম উদ্বুদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক চেতনায় উজ্জীবিত থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু তনয়া আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার স ঘোষণা করেন। পরে মাননীয় উপাচার্য মেলায় স্থাপিত স্টলগুলো ঘুরে দেখেন।
চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব কে এম নুর আহমদ-এর সভাপতিত্বে এবং বঙ্গবন্ধু বইমেলা ২০১৯-এর সমন্বয়কারী ও চবি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মাধব দীপ-এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি বাংলা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মহীবুল আজিজ এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জনাব জামাল উদ্দিন। অনুষ্ঠানে চবি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, হলসমূহের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, অফিস প্রধানবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য বই মেলা প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত চলবে এবং দুপুর ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আগামী ১ মে ২০১৯ বিকাল ৩ টায় চবি নাট্যকলা বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক জনাব মোস্তফা কামাল যাত্রা’র নির্দেশনায় মঞ্চনাটক ‘মহানায়ক’ মঞ্চস্থ হবে।