জিয়াউর রহমান কুলাঙ্গারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার খলনায়ক

জেলা নির্মূল কমিটির পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী পরিষদ ঘোষণা ও পরিচিতি সভায় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী মোজাম্মেল

সদ্য স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী জননেতা আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে কুলাঙ্গারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার খলনায়ক অভিহিত করে বলেছেন, যে আদর্শ ও চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার নৃশংস হত্যাকা-ের পর তা আমরা ধরে রাখতে পারিনি। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর স্বৈরশাসক ও সামরিকতন্ত্রের উত্থান ঘটে। এ সময়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী চক্র মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনাকে বারবার বিকৃত ও বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালায়।
নির্মূল কমিটির ২৭ বছরের নিরলস সংগ্রামের বর্ণনা দিতে গিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের একুশ বছর পর ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে সূচিত হয়েছে নাগরিক সমাজের এই আন্দোলন। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও চেতনা সম্পর্কে সচেতন করতে এ আন্দোলন বিশাল ভূমিকা পালন করে। গত ২৭ বছরে অনেক ঝড়ঝাপটা নির্মূল কমিটির নেতৃবৃন্দের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। কিন্তু শত বাধা উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিচল থেকে নির্মূল কমিটির এই সময়ে অর্জনও অনেক। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধু সরকার ’৭১-এর গণহত্যাকারী, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিল। বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর সহযোগীদের নির্মম হত্যাকা-ের পর এই বিচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে আবার এই বিচার কার্যক্রম শুরু করে।
(আজ) ১৯ এপ্রিল, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা এবং নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদ (২০১৯-২১)-এর পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা নির্মূল কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান, স্বাধীনতা সংগ্রামী জহুর আহমদ চৌধুরীর সন্তান শরফুদ্দীন চৌধুরী রাজু ও জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
আলোচনায় অংশ নেন- নবনির্বাচিত জেলা সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, সহ-সভাপতি স্বপন সেন, দীপঙ্কর চৌধুরী কাজল, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মইনুদ্দিন, মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মিলি চৌধুরী, মো. হেলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর রেখা আলম চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক অলিদ চৌধুরী, হাবিব উল্লাহ চৌধুরী ভাস্কর, এ.কে.এম জাবেদুল আলম সুমন, আবু সাদাত মো. সায়েম, আবদুল মান্নান শিমুল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম খাঁন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চৌধুরী, মো. সাহাব উদ্দিন, অসিত বরণ বিশ^াস, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রুবা আহসান, সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সূচিত্রা গুহ টুম্পা, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আলাউদ্দিন বাবু, প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক সনেট চক্রবর্ত্তী, সহ-প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক রুবেল চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক মনজুর হোসাইন, সহ-প্রকাশনা সম্পাদক মো. জয়নাল আবেদিন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এ.টি.এম ওসমান গণি, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলহাজ¦ সৈয়দ কামাল উদ্দীন, সহ-আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট রক্তিম বিশ^াস, শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ড. মোজাহেরুল আলম, সহ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক ওয়াহেদ রাসেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রাজীব চৌধুরী, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক রুবেল আহমেদ বাবু, দফতর সম্পাদক মো. রুবায়েত হোসেন, সহ-দফতর সম্পাদক ইমরান আহমেদ, সহ-দফতর সম্পাদক বেলাল হোসেন। কার্যনির্বাহী সদস্য ফয়সাল চৌধুরী, এম. হামিদ হোছাইন, জেড.এ.এম রুকনুজ্জামান রোকন, মো. রাসেল, আব্দুল কাদের, মো. আলমগীর, আখতার হোসেন, মোহাম্মদ হাসান, ইমরান হোসেন ইমু, নাছিমা আকতার, মরিয়ম আক্তার মুক্তা, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. আকতার.উজ.জামান, আবু সুফিয়ান, আকিব জাবেদ, মোস্তাক আহমেদ মুরাদ, আবদুল্লাহ মুহিত, আবদুল হাকিম, সঞ্জয় দত্ত, ইব্রাহিম মুন্না, দিপু বড়–য়া প্রমুখ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নাজমুল সাদেকী, আহমেদ কুতুব, সাজ্জাদ হোসেন তালুকদার, খোকন, মো. আনিস, মো. ওমর ফারুক, মোহাম্মদ নুর উদ্দীন, মো. জাহেদুল আলম, মো. সেলিমুল হক, মো. ইরফান খাঁন, জোবায়ের আলম খান তুহিন, মোক্তার হোসেন রাজু, রুপন কুমার বড়–য়া, মো. আনোয়ার হোসেন, লিটন দাশ, সুমি চৌধুরী, অধরা রোদসী, মো. সায়েম চৌধুরী, মো. শাহাব উদ্দীন মহিন ।
সভাপতির বক্তব্যে শওকত বাঙালি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি আমাদের উন্নয়নের ধারা ব্যাহত করতে এবং সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে ধর্মের নামে হত্যা ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে পবিত্র ইসলাম ধর্মকে কলঙ্কিত করতে চাইছে। জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আজ প্রশংসিত হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পরমত সহিষ্ণুতা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের শ্রেষ্ঠ উপাদান। কোনও অপশক্তি আমাদের সেই গৌরবময় অর্জনকে ম্লান করতে পারবে না। আমাদের হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক চেতনা, মানবিক মূল্যবোধ শুধু সংরক্ষণ নয়, এর বিকাশও ঘটাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ার সংগ্রামে আগামী দিনগুলোতে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।