খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে সরকারের ঘুম হারাম: রিজভী

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে সরকারের ঘুম হারাম হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসা ও জামিনে বাধা প্রদানের পেছনে সরকারের গভীর ভয়ঙ্কর নীলনক্সা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন দেশনেত্রীকে হয় দুনিয়া থেকে, না হয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে। গত কয়েকদিন ধরে সরকারদলীয় লোকদের মিডিয়া এবং মন্ত্রী ও তাদের নেতাদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। দেশনেত্রীর চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান কামালের বক্তব্য এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সাহেবের বক্তব্য বিপরীতধর্মী। এতে বোঝা যায় তারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা নিয়ে নিষ্ঠুর তামাশা করছেন।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রাণপ্রিয় নেত্রী-দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। পিজি হাসপাতালে তার চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা নেই।
ডাক্তারদের দিয়ে গঠিত বোর্ড তার রোগ নির্নয় ও চিকিৎসায় কোন অগ্রগতি নেই। তারাও স্বীকার করছেন দেশনেত্রীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। আমরা জেনেছি, তিনি একেবারেই হাঁটাচলা করতে পারছেন না। ডায়াবেটিস, জটিল অন্যান্য রোগ ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বেগম খালেদা জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থ। সরকার তার বড় ধরণের কোন ক্ষতি করার জন্য সময়ক্ষেপণ করছে কি না এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন গভীরতর হচ্ছে। তবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ক্ষতিকর কিছু হলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলতে চাই-নিঃশর্তভাবে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে সাজানো মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে এক বছরের বেশী সময় বন্দি রাখা হয়েছে। জামিন পাওয়া তার নাগরিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। যে মিথ্যা মামলায় তাকে জোর করে সাজা দেয়া হয়েছে, সেই মামলায় অন্যান্য ব্যক্তিরা সবাই জামিনে রয়েছেন। আদালতের ওপর প্রভাব খাটিয়ে শুধু দেশনেত্রীকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। নতুন নতুন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেয়া হচ্ছে। আসলে মামলা কিছু নয়, আসল উদ্দেশ্য দেশনেত্রীকে তিলেতিলে শেষ করা অথবা চিরজীবনের জন্য রাজনীতির ময়দান থেকে সরিয়ে দেয়া এবং তাদের উদ্দেশ্য সফল না হওয়া পর্যন্ত বন্দি করে রাখা। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী থেকে শুরু করে তাদের প্রিয়ভাজন ব্যক্তিরা একই ধরণের মামলায় জামিনে আছেন।

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, সরকারকে বলবো-এক মাঘে শীত যায় না। পরিস্থিতি সব সময় এক থাকে না। নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভাবুন। সময় বদলাতে তো সময় লাগে না। মানুষের আওয়াজ শুনুন। পায়ে পা মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে জনতা। ফুঁসছে মানুষ। জনতার আদালত তৈরী হচ্ছে। তাই নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র বন্ধ করে দ্রুত দেশনেত্রী জনগণের আস্থার প্রতীক বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আর বাধা দিবেন না। জনগনের নেত্রীকে জনগণের মাঝে ফিরতে দিন।

রিজভী আহমেদ আরও বলেন, মানবিক কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে এটর্নি জেনারেল যে বক্তব্য দিয়েছেন, যদি তাই হয় তবে তিনি বারবার মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়ার জামিন পেতে বাধা দিচ্ছেন কেন? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি পেতে সরকারের নির্দেশই সবচাইতে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে।