মো. জয়নাল আবেদীন (৪২), প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবেই পরিচিত এলাকায়। কিন্তু সেই শিক্ষকই ইয়াবা সাম্রাজ্যে পরিচিত ‘দুলাভাই’ নামে।
তার আসল নাম কেউই জানতো না। এমনকি তার চেহারাও কখনও কেউ দেখেনি। শুধু একটি মোবাইল নাম্বারই ছিল তার পরিচয়। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) গভীর রাতে নগরের ডবলমুরিং থানাধীন দেওয়ানহাট মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে গ্রেফতার করা হয় আরও দুই সহযোগীকে। উদ্ধার করা হয় ২১ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা ও নগদ ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
গ্রেফতার জয়নাল কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া থানাধীন জুলহারপাড়া গ্রামের মো. সিদ্দিক আহমেদের ছেলে। অন্য দুইজন হলেন- তার শ্যালক মো. মোবারক হোসেন (২৭) ও মো. রেজাউল করিম দিদার (৩১)।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (পশ্চিম) পংকজ দত্ত বাংলানিউজকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে দেওয়ানহাট মোড়ের মুম্বাই সুইটস দোকানের সামনে থেকে জয়নাল আবেদীন প্রকাশ দুলাভাইকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে দুই সহযোগীকে গ্রেফতার এবং ২১ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা ও সাড়ে ৮ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, জয়নাল আবেদীন ইয়াবার গডফাদার। তাকে সবাই চেনে ‘দুলাভাই’ নামে। চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবার অন্যতম প্রধান যোগানদাতা তিনি। তার নাম কেউ জানে না, কেউ কখনও দেখেওনি তাকে। শুধুমাত্র একটি মোবাইল নাম্বারই ছিল নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার পরিচয়। সেই নাম্বারে ফোন করলেই তিনি ইয়াবা নিয়ে হাজির হতেন। ইয়াবা দিয়ে সেই নাম্বার আবারও পাল্টে ফেলতেন। দুইদিন আগে প্রায় ২২ হাজার পিস ইয়াবাসহ চালক-হেলপারকে গ্রেফতারের পর উঠে আসে এই দুলাভাইয়ের নাম।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দেওয়ানহাট মোড়ে ১ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবাসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার হাজীরপুল এলাকায় তার বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে আলনার পাশে লুকিয়ে রাখা একটি শপিং ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় আরও ২০ হাজার ইয়াবা। গ্রেফতার করা হয় তার দুই সহযোগী মো. মোবারক হোসেন ও মো. রেজাউল করিম দিদারকে।
তিনি আরও বলেন, ইয়াবার গডফাদার হলেও তার ইয়াবা কারবারের ঘটনা এলাকাবাসী জানে না। এলাকায় তিনি স্কুল শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। তিনি খুরুশকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। এর আগেও একবার ইয়াবাসহ গ্রেফতার হন তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল আবেদীন প্রকাশ দুলাভাই জানান, তিনি মূলত কক্সবাজার থেকে ইয়াবা এনে নিজের কাছে মজুদ করেন। এরপর তা সারাদেশে বিক্রি করেন।











