চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখাসহ দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক, জঙ্গিবাদ ও চোরাচালানসহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। এসব অপরাধ রোধে প্রশাসন থাকবে জিরো টলারেন্স। সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইনের কিছু কিছু গ্রামে আবারো নতুন করে অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করেছে মিয়ানমার সরকার। সেখানকার নির্যাতিত রোহিঙ্গা ও রাখাইনের অধিবাসীরা এখানে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। সুযোগ পেলেই তারা কক্সাবাজার, বান্দরবান ও অন্যান্য এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়বে। মিয়ানমারের কোনো নাগরিক বা রোহিঙ্গাও যাতে নতুন করে এদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে আসা মাদক, অস্ত্রের চোরাচালান ও তেল পাচার রোধে সড়ক পথের পাশাপাশি নৌপথে টহল অব্যাহত রাখাসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটতে পারবে না। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর নজরদারী দিতে হবে। সরকারে দেয়া নির্দেশনা অমান্য করা যাবে না। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কর্তৃক বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন মামলার তথ্য বিবরণী, নিষ্পত্তি ও অগ্রগতির প্রতিবেদন নিয়মিত দাখিল করতে হবে।
আজ ২৫ মার্চ ২০১৯ ইং সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্স সভা, জেলা প্রশাসকগনের সাথে সমন্বয় সভা, বিভাগীয় রাজস্ব সম্মেলন, বিভাগীয় উন্নয়ন সভা ও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগনের সাথে সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিস পৃথক সভাগুলোর আয়োজন করেন।
তিনি বলেন, খুন, ছিনতাই, দস্যুতা, ইভটিজিং, রাহাজানি, অপহরণ ও অন্যান্য অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর থাকতে হবে। মাদক ব্যবসায়ীদেরকে আত্মসমর্পনের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকগনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সীমান্তবর্তী জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চোরাচালান নিরোধ কমিটির অনুষ্ঠিত সভা ফলপ্রসূ হওয়ার ব্যাপারে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সরকার ভুর্তুকি দিয়ে বিদেশ থেকে জ¦ালানি তেল আমদানি করছে। পেট্রোল পাম্প থেকে ডিজেলসহ অন্যান্য জ¦ালানি তেল যাতে পাচার না হয় সে বিষয়ে সীমান্তবর্তী জেলা প্রশাসকগণকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ফিলিং স্টেশনের মালিকদের সাথে এ ব্যাপারে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। বাসে বা গাড়ীতে চাপা পড়ে যাতে আর কোন শিক্ষার্থীর মৃত্যু না ঘটে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট যানবাহন মালিক-শ্রমিকদের সাথে বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, মাদক রোধে পুলিশের পক্ষ থেকে থাকবে জিরো টলারেন্স। অস্ত্র উদ্ধার, চোরাচালানরোধ, জঙ্গি-সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইদানিং সড়ক দুর্ঘটনা সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য গাড়ির চালক-হেলপার এককভাবে দায়ী নয়। সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পৃথক সভাগুলোতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, বিভাগীয় পরিচালক (স্থানীয় সরকার) দীপক চক্রবর্তী, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, বিজিবি’র চট্টগ্রাম রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগে: জেনারেল মো. আমিরুল ইসলাম সিকদার, ডিজিএফআই’র চট্টগ্রাম শাখার কর্মকর্তা বিগ্রে: জেনারেল মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ ভূইয়া, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী মোঃ শামসুদ্দোহা, চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্ল্যানিং), মোঃ জাফর আলম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন (চট্টগ্রাম), তন্ময় দাস (নোয়াখালী), আবুল ফজল মীর (কুমিল্লা), মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম (বান্দরবান), অঞ্জন চন্দ্র পাল (লক্ষ্মীপুর), একেএম মামুনুর রশিদ (রাঙামাটি), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামাল মোহাম্মদ রাশেদ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), আশরাফুল আফসার (কক্সবাজার), মোঃ মাইনুল হাসান (চাঁদপুর), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী, সিএমপির ডিসি-ডিবি (বন্দর) এস.এম. মোস্তাইন হোসেন, কাস্টম কমিশনার কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার নওরোজ হাসান তালুকদার, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মজিবুর রহমান পাটোয়ারী, এনএসআই’র অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা পিপি এডভোকেট একেএম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, চোরাচালান নিরোধ ট্রাইবুন্যালের স্পেশাল পিপি এডভোকেট হরিপদ চক্রবর্তী, মহানগর পিপি এডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অঞ্জনা ভট্টাচার্য্য প্রমুখ। বিগত সভার সিদ্ধান্ত ও অগ্রগতি তুলে ধরেন বিভাগীয় কমিশনার অফিসের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক দাশ। পৃথক সভাগুলোতে বিভাগের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাড়ি আমাদের চট্টগ্রাম নতুন করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবেচট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার...