রাত পোহালেই ভোট দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৪ উপজেলায় লোহাগাড়ায় নির্বাচন স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক;তৃতীয় ধাপে রাত পোহালেই (২৪ মার্চ) দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৪ উপজেলায় ভোট। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় আজ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে ব্যালট পেপারসহ সকল নির্বাচনী সামগ্রী।
আগামীকাল পটিয়া, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী ও বাঁশখালী উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে আদালতের নির্দেশে শেষ মুহূর্তে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাচন স্থগিত হয়ে গেছে। লোহাগাড়া উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় এখন ৪ উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৫ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে ভোটযুদ্ধে আছেন। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নির্বাচনী মাঠে থাকছে-নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার ফোর্সসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বলয়। ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুত প্রায় ১০ হাজার ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা।
লোহাগাড়া উপজেলাতে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেছে এমন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর প্রতীক ব্যালটে ছাপানোয় ওই উপজেলার নির্বাচনই স্থগিত করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আদালতে মামলা থাকায় লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের সহকারী সচিব মো. আশফাফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিষয়টি আজাদীকে জানান জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান।
একইদিন আনোয়ারা উপজেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় এই উপজেলায় আর ভোট হচ্ছে না। এখন চার উপজেলায় ১২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ২৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।
বাঁশখালীতে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন তিনজন। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সোলতানুল কবির চৌধুরীর বড় ছেলে চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম এবং সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মৌলভী নুর হোসেন।
পটিয়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। অন্যদিকে বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জন করলেও দলের নেত্রী ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা বেগম জলি এবার লড়ছেন চেয়ারম্যান পদে। এ ছাড়াও স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন সংগঠক সাজ্জাদ হোসেন।
বোয়ালখালীতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলমের পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন।
চন্দনাইশে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা একেএম নাজিম উদ্দীন। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পর পর দু’বার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী।
নির্বাচনের সকল প্রস্তুতির ব্যাপারে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান আজাদীকে জানান, আগামীকাল ২৪ মার্চ চট্টগ্রামে ৫ উপজেলায় ভোট গ্রহনের জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ব্যালট পেপারসহ সকল সকল নির্বাচনী সামগ্রী উপজেলায় পৌঁছে গেছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে লোহাগাড়া লোহাগাড়া পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এদিকে ভোট গ্রহণের ৩৬০৫ জন প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ৬৩১২ জন পোলিং কর্মকর্তা প্রস্তুত রয়েছে। গতকাল রাত ১২ টা থেকে প্রার্থীদের সকল ধরনের প্রচার-প্রচরনা বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে আমাদের লোহাগাড়া প্রতিনিধি জানান, আগামীকাল লোহাগাড়া উপজেলায়ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার রাকিবজ্জামান রেনু গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখা- ২ এর সহকারী সচিব মোহাম্মদ আশফাকুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নং- ৮৭১/২০১৯ এ আপিল বিভাগের আদেশ যথাযথভাবে প্রতিপালনার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের সকল পদের নির্বাচন স্থগিত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।