জাতীয় অধ্যাপক প্রয়াত ডা. নুরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি) এর অ্যাকাডেমিক ভবন ভেঙে ফেলার অভিযান বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ইউএসটিসির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সম্প্রতি ইউএসটিসি সিন্ডিকেট ১৬তলা অ্যাকাডেমিক কাম ইনস্টিটিউট ভবনে ‘সায়মা ওয়াজেদ সেন্টার অব হোপ ফর অটিস্টিক চিলড্রেন’ স্থাপনের অনুমোদন পেয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করেছে। একই ভবনে ‘ন্যাশনাল প্রফেসর ড. নুরুল ইসলাম ইন্সটিটিউট ফর ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভোল্যুশন’ স্থাপনের জন্য ইউএসটিসি সিন্ডিকেট ২০১৯ সালের ১০ মে অনুমোদন দেয়।
‘বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম, সেক্রেটারী জেনারেল, ইসলামিক মেডিক্যাল মিশন; চেয়ারম্যান, জনসেবা ফাউন্ডেশন ও প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ইউএসটিসি বরাবরে বিভিন্ন দাগের ১ একর জমি হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য ১৯৯২ সালের ১৩ ডিসেম্বর ৯৯ বছরের জন্য লিজ প্রদান করে। লিজপ্রাপ্ত জমির ওপর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) পত্রের মাধ্যমে ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষকে ১৬তলা বিশিষ্ট অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের অনুমতি দেয়। এরপর সিডিএ’র অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ইউএসটিসি’র ব্লক ডি’র জায়গার ওপর ১৬তলা অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ করে বিগত প্রায় ১৫ বছর ধরে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে’।
উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের দলিল সম্পাদনের সংযুক্তি ম্যাপে এবং জমি হস্তান্তরের সময় জমির ওপর সমতল ছাড়া কোনও খাল/নালা/ড্রেনের অস্তিত্ব ছিল না। সিডিএ অনুমোদিত নকশাতেও কোনও চিহ্ন ছিল না। কিন্তু ১৯ সেপ্টেম্বর সিডিএ’র একটি উচ্ছেদ টিম বিনা নোটিশে ব্লক ‘ডি’-তে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন সময়ে ভবনটির সীমানা দেওয়াল, ভবনের পিছনের অংশের দুই তলার দেওয়াল ভেঙে ফেলে। তাৎক্ষণিক তাদেরকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা তাদের উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করেনি। হঠাৎ এই ধরনের অভিযানের ফলে শিক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে পড়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়।
‘১০ মার্চ সকালে আমাদের সব অনুরোধ উপেক্ষা করে সিডিএ’র উচ্ছেদ টিম বিনা নোটিশে ইউএসটিসি’র এই অ্যাকাডেমিক ভবনের ক্ষতিসাধনের কাজ অব্যাহত রাখে। কাজ অব্যাহত রাখায় পুরো ভবন ধসে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যার কারণে অ্যাকাডেমিক ভবনে থাকা অত্যাধুনিক গবেষণা যন্ত্রপাতি, ল্যাবসমূহ, ক্লাসরুম, সেমিনার হল, লাইব্রেরি ও অফিস কক্ষসহ অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সংকটের মুখে পতিত হচ্ছে’।
এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী, সিডিএ চেয়ারম্যান, ইউজিসি চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা কামনা করেন অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।