৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধকারীরা আস্তাকুঁড়েই চলে যাবে: শেখ হাসিনা

‘যারা এক সময় বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ‘নিষিদ্ধ করেছিল’ তারা ধীরে ধীরে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ের দিকেই যাচ্ছে এবং তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়েই চলে যাবে, আর নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা এ বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসবে তারাই বেঁচে থাকবে।’

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি অভিযোগ করেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পছন্দের ছিল না বলেই ‘জিয়াউর রহমান ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ’ করে দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর ৭ই মার্চের ভাষণ কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সেটা আপনারা বিবেচনা করে দেখেন। পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার পর প্রথমে মুশতাক বেঈমানি করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে দুই মাস ক্ষমতায় থাকতে পারল না। এরপর আসল জিয়াউর রহমান এবং এই ভাষণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’

‘বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর ছবিও নিষিদ্ধ। সব কিছুই নিষিদ্ধ ছিল। প্রশ্ন হচ্ছে এটাই যে, তাহলে নিষিদ্ধ কেন ছিল? যে ভাষণ পাকিস্তানিরা পছন্দ করে না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পছন্দের ছিল না বলেই জিয়াউর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। সেটাই একের পর এক অনুসরণ করে গেছে মিলিটারি ডিক্টেটর যারা এসেছে বা যারা ক্ষমতা ওই ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে রেখেছিল।’

বৈরী সময়েও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পিছু হটেননি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে ৭ই মার্চ আসলে গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে সব জায়গায় কিন্তু এই ভাষণ বাঁজতে শুরু হল। এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী জীবন পর্যন্ত দিয়েছে।’

‘আমি বারবার একটা প্রশ্ন রাখি কেউ উত্তর দিতে পারে না। দিতে পারবেও না। পৃথিবীর বহু দেশে নেতারা ভাষণ দিয়েছে। আড়াই হাজার বছরের ভাষণ নিয়ে গবেষণা হয়েছে। কিন্তু এই ভাষণটি হয়ে গিয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ। পৃথিবীর কোনো ভাষণ এতবার বাজানো হয় নাই। সারা বিশ্বে এই ভাষণ এখনো আবেদন রাখে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জয় বাংলা স্লোগানও এই দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যেই জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে অর্থাৎ তারা জীবন দিয়েছে, সেই স্লোগানটাও কিন্তু ’৭৫ এর পর নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’

‘কিন্তু বাস্তবতা হল, সত্যকে কেউ কখনো অস্বীকার করে মুছে ফেলতে পারে না। আর সব থেকে বড় কথা বাঙালির জন্য জাতির পিতা যে কথা বলে গিয়েছিলেন ৭ই মার্চের ভাষণে- কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। ২১টা বছর দাবায় রাখার চেষ্টা করেছে এই ষড়যন্ত্রকারীরা-খুনিরা, পারে নাই।’