শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত চার্চিলের স্ট্যাচু সরিয়ে ফেলার বিরোধিতা করবেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী

শেষ নিশ্বাস থাকা পর্যন্ত উইন্সটন চার্চিলের স্ট্যাচু বা মূর্তি সরিয়ে ফেলার বিরোধিতা করবেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ফ্যাসিস্ট-বিরোধী এবং ব্লাক লাইভস ম্যাটার বিক্ষোভকারীদের হাতে চার্চিলের মূর্তি আক্রান্ত হওয়ার পর ক্ষুব্ধ জনসন এ কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, উইন্সটন চার্চিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বৃটেনের বিজয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বৃটেনের দু’বারের প্রধানমন্ত্রী। যুদ্ধকালীন সময়ে নেতৃত্ব দেয়া এই নেতার বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ পাগলামি ছাড়া কিছু নয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল।

বরিস জনসন সতর্ক করে দিয়েছেন এই বলে যে, অতীতের ঔপনিবেশ ও শোষণের ইতিহাসকে বৃটেনের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখা উচিত নয়। এর পরিবর্তে তাদের উচিত দেশজুড়ে বর্ণবাদের ভিত্তিতে অসমতার বিষয় যখন সামনে আনা হচ্ছে, তখন এসব নেতার মূর্তি কি অর্থ বহন করে বা কি বুঝায় সে বিষয়ে সন্তানদের শিক্ষিত করা। শনিবার আরো একবার লন্ডনের রাস্তায় ব্লাক লাইভস ম্যাটার ও এর বিরোধী পক্ষের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের পর এমন মন্তব্য করেছেন বরিস জনসন।

শনিবার হোয়াইট হল থেকে উগ্র ডানপন্থিদের দাঙ্গা পুলিশ যখন সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল, তখন তাদের দিকে মিসাইল, ধোয়া গ্রেনেড, বোতল ও বিভিন্ন জিনিস ছুড়তে দেখা যায়। এতে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শতাধিক মানুষকে। এই ব্লাক লাইভস ম্যাটার বিক্ষোভের বিরুদ্ধে এই উগ্র ডানপন্থিদের বিক্ষোভকে প্রধানমন্ত্রী জনসন বর্ণবাদী দস্যুতা বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর আগের সপ্তাহে পার্লামেন্ট স্কয়ারের কাছেই অবস্থিত উইন্সটন চার্চিলের মূর্তিতে ছবি সেঁটে দেয় ব্লাক লাইভস ম্যাটার সমর্থকরা। তার জবাবে পাল্টা বিক্ষোভকারীদের মূল পয়েন্ট হয়ে ওঠে ওই মূর্তি। তারা চার্চিলের মূর্তিকে রক্ষার কথা বলে।

উল্লেখ্য, উইন্সটন চার্চিলকে বৃটিশরা জাতীয় বীর হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বৃটেনে এ যাবতকালের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে- এমন জরিপেও তিনি শীর্ষে থাকেন। নতুন ৫ পাউন্ডের যে নোট ছাপা হবে সেখানে তার ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু সমালোচকরা বলেন, বিভিন্ন সময়ে তিনি বিভিন্ন বর্ণের জাতি নিয়ে যেসব বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন এবং ১৯৪৩ সালে বাংলায় দুর্ভিক্ষের সময় তার ভূমিকার কারণে চার্চিলের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। ওই ১৯৪৩ সালে মিত্রবাহিনী খাদ্য সরবরাহ স্থগিত করেছিল, যার ফলে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।