বাকশালী মুজিববাদী শাহবাগী ও ১৪ দলের বিচার নিশ্চিতের দাবিতে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মঞ্চ ২৪ ও জাগ্রত জুলাই’র যৌথ ব্যানারে আয়োজিত গণসমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, হত্যা, বাকশাল কায়েম, গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করা এবং দমন–পীড়নের দায় যারাই বহন করেছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

তারা বলেন, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। সেই কর্মকাণ্ডের বিচার না হলে দেশে আইনের শাসন অর্থহীন হয়ে পড়বে।
সমাবেশে বাকশাল কায়েমে জড়িত দলগুলোর নাম উল্লেখ করে তাদের বিচারের দাবি জানানো হয়। বক্তারা বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়ন, জাতীয় লীগ, জাতীয় কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয় মহিলা লীগ, জাতীয় যুবলীগ ও জাতীয় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন।
এছাড়া ১৪ দলের সঙ্গে যুক্ত দলগুলোকে ‘শাহবাগী স্বৈরাচারের অংশীদার’ বলে অভিহিত করে তাদের বিরুদ্ধেও বিচার দাবি জানানো হয়।
বক্তারা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), ওয়ার্কার্স পার্টি (রাশেদ খান মেনন), গণতন্ত্রী পার্টি (নুরুর রহমান সেলিম), গণ আজাদী লীগ, বাসদ (রেজাউর), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (দিলীপ বড়ুয়া), ন্যাপ (মোজাফফর), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, জাসদ (ইনু), শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল, তরিকত ফেডারেশন ও কমিউনিস্ট কেন্দ্রকে দায়ী করে বক্তব্য দেন।
অতীতের বিভিন্ন আন্দোলন–সংগ্রামে নিহতদের প্রতি অবহেলার অভিযোগ তুলে বক্তারা বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে যারা জীবন দিয়েছে তাদের প্রতি সমবেদনা দেখানো হয়নি, বরং রাজনৈতিক সুবিধার জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠীকে দলে টেনে নেওয়ার প্রতিযোগিতা চলছে। বিভিন্ন সময়ে গণআন্দোলনে শহীদ হওয়া মাদরাসার ছাত্রসহ ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠীর বলিদান রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দলগুলো উপেক্ষা করেছে। দেশের ভেতরে সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠা এবং বহির্বিশ্বের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে, যা দেশের স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী।
বক্তারা আরও বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানসহ অতীতের গণজাগরণ ও বিভিন্ন আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনা যথাযথ তদন্ত পায়নি। বহু তরুণ ও ছাত্র নিহত হলেও তাদের প্রতি দায়িত্বশীল মহলের সহমর্মিতা ছিল না। দেশের ইতিহাসে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ত্যাগগাঁথা উপযুক্ত মর্যাদা পায় না, অথচ নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়ের ঘটনা নিয়ে অতিরিক্ত আবেগপ্রবণতা দেখানো হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে বর্তমান পর্যন্ত ধর্মপ্রাণ জনগণ ও কওমি অঙ্গন বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, যা স্বীকার করতে রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক মহল ব্যর্থ হয়েছে।
বক্তারা বলেন, আমরা রক্ত দিয়েছি শুধু সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়, পুরো ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের জন্য। দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক দখলদারিত্ব বন্ধ না হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জাতীয় সংসদ বা সংবিধানে কোনো আইন প্রণয়ন করা হলে তা যেন দেশের ধর্মপ্রাণ জনগণের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের বিরোধী না হয় বলে দাবি তোলেন বক্তারা। তারা বলেন, আমরা বহির্বিশ্বের রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক প্রভাবমুক্ত একটি স্বাধীন, স্থিতিশীল ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ দেখতে চাই।
এছাড়া ভবিষ্যতে যদি কোনো স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিবাদী প্রবণতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, তাহলে তারা আবারও রক্ত দিয়ে তা প্রতিরোধ করবেন বলেও বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন।











