ইউক্রেনকে ১০০টিরও বেশি রাফায়েল যুদ্ধবিমান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। এর পাশাপাশি কিয়েভকে আধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ এবং ড্রোন সরবরাহ করবে প্যারিস। আগামী ১০ বছর ধরে ধাপে ধাপে এসব যুদ্ধবিমান ও সামরিক সরঞ্জাম হস্তান্তর করা হবে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) ফ্রান্সের ভিল্লাকুব্লে শহরের সামরিক বিমানবন্দরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি এই চুক্তিতে সই করেন।

চুক্তি স্বাক্ষরের পর ব্রিফিংয়ে জেলেনস্কি বলেন, আমরা বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী এবং আধুনিক একটি এয়ার ডিফেন্স পেতে যাচ্ছি। এমন সময়ে এই সামরিক সহযোগিতা চুক্তি হলো, যখন ইউক্রেনের ঝাপোরিজ্জিয়া অঞ্চলে রুশ বাহিনী ও ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। ইউক্রেনীয় সামরিক বিশ্লেষক সেরহি কুজহান জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়া প্রতি মাসে গড়ে ৬০০-এর বেশি গ্লাইড বোমা ইউক্রেনে নিক্ষেপ করছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের যুদ্ধবিমান এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম খুব প্রয়োজন ছিল। ফ্রান্সের দেওয়া এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের রেঞ্জ হবে ২০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ রকেট, বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্র ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে এলে এটি সেটি ধ্বংস করতে পারবে। রাশিয়ার ব্যবহৃত বর্তমান সিস্টেমের রেঞ্জ ২৩০ কিলোমিটার।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় এলিসি প্রাসাদ থেকে জানানো হয়, এই চুক্তি শুধু একটি সামরিক সরঞ্জাম কেনাবেচার চুক্তি নয়; বরং এটি একটি বড় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির অংশ। এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে—রাশিয়ার ফ্রিজ করা সম্পদ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যবহার করার পরিকল্পনা।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, আমরা ইউক্রেনকে ১০০ রাফায়েল দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। এটি বিশাল একটি পদক্ষেপ। আমাদের রাফায়েল, ড্রোন, গোলাবারুদ এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
উল্লেখ্য, ফ্রান্সের তৈরি রাফায়েল বিশ্বের আধুনিক ও শক্তিশালী যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে অন্যতম। পঞ্চম প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমান ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০০ কিলোমিটার গতিতে উড়তে পারে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫০ হাজার ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছাতে সক্ষম। এটি একই সময়ে একাধিক পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে এবং উন্নত মেশিনগানে সজ্জিত।
সূত্র : রয়টার্স











