কোনো সরকারের শাসন আমলে রাউজানে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়নি!

শফিউল আলম, রাউজান: চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলা। জ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিক, শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতার জম্মভুমি এই রাউজান। বিট্রিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী মাস্ট্রার দা সুর্য সেনের জম্মভুমি রাউজানের নোয়াপাড়ায়। রাউজান উপজেলার মধ্যে শীর্ষ র্পযায়ের সরকারী বেসকারী প্রতিষ্টানের অনেক কর্মকর্তা রয়েছে। জ্ঞানী গুণি ব্যক্তিদের জম্মভুমি এই রাউজান উপজেলার এক সময়ে অনেক সুনাম ছিল। ছিল রাজনৈতিক সহবস্থান। ছিলনা কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, ছিলনা কোন হানাহনি। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে রাউজান কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্র ইউনিয়ন নেতা সমীরন কে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার দাবানলে ১৯৮৬ সালে রাউজান কলেজে ডিগ্রী পরিক্ষা দিয়ে পরিক্ষার হল থেকে বাড়ী যাওয়ার পথে রাউজানের গহিরা মোবারক খীল এলাকার বাসিন্দ্বা ছাত্রলীগ নেতা ফয়েজুল আলম খান ফারুককে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের লালিত সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে এরশাদ সরকারের শাসন আমলে হলদিয়া আমির হাটে ছাত্রলীগ নেতা ফখরউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, মজিুবুর রহমান পেয়ারু। এরই ধারবাহিকতায় হলদিয়ায় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম মেম্বার, ছাত্রলীগ নেতা এমদাদ, আওয়ামী লীগ নেতা ইদ্রিস মাস্টার।

এরশাদ ও বিএনপি সরকারের শাসন আমলে হলদিয়ায় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের লালিত সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয় ইউপি মেম্বার তৎকালীন এনডিপি নেতা এজাহার বৈদ্য, শামশু, ফারুক, আবদুল মোনাফ, জামাল পাশা মোহাম্মদ হারুন। বিএনপি সরকারের শাসন আমলে ডাবুয়ায় খুন হয় জ্ঞানজ্যেতি ভিক্ষু, ছাত্রলীগ নেতা টিটু. বিটু. শফিউল আলম বাচুরিয়া, দিদারুল আলম, এন,ডিপির খোরশেদ। এরশাদ সরকারের শাসন আমলে রাউজানের চিকদাইরে ছাত্রলীগ নেতা রফিক খুন হয় প্রতিপ্ক্ষ রাজনৈতিক দলের সন্ত্রাসীদের হাতে । বি, এন,পি সরকারের শাসন আমলে রাউজানের নোয়াজিশ পুরে খুন হয় আবুল কাসেম বল্ল্যাইয়া, পরবর্তী রাউজান পৌরসভার পশ্চিম গহিরার ছাত্রলীগ নেতা আসলাম, রাউজানের মোবারক খীল এলাকার এনডি নেতা মনসুর। এরশাদ সরকারের শাসন আমলে রাউজান পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দ্বা এনডিপি, মনাকে রাউজান ফকির হাট বাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করে।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এলাকায় আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকান্ডের শিকার হয় বিনাজুরী ইউনিয়নের পশ্চিম বিনাজুরীর ছাত্রলীগ নেতা আশিষ বড়ুয়া, জাম্মইন এলাকার সমীর । রাউজান পৌরসভার সুলতানপুরের যুবলীগ নেতা আলমগীর, মুক্তিযোদ্বা নিহার কান্তি বিশ্বাস মন্টু. মেকানিক সেলিম। রাউজানের ৭নং রাউজান ইউনিয়নের হরিশখান পাড়ার ফজল হক, গিয়াস, ব্যবসায়ী শাহ আলম, ৭নং রাউজান ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আকতার হোসেন, রাউজানের মোহাম্মদপুরের নেজাম, রাউজান পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম রাউজান এলাকার বাসিন্দ্বা মোটর সাইকেল মেকানিক বোবা নাসির, খলিলাবাদের আবদুল হালিম, পুর্ব গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন রাজু, ছাত্রলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন জামিল, মেম্বার প্রদীপ সেন, ফেরদৌস আলম মাস্ট্রার, আবুল কাসেম, যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর, মানিক, আবু তালেব, পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবু তাহের, টুক্কুল মেম্বার, শ্রমিক দল নেতা কামাল, ননা মিয়া, উরকিরচর ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ, এনডিপি নেতা ইউছুপ, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খায়েজ আহম্মদ, ছাত্রলীগ নেতা সোহেল . রিটন, ব্যবসায়ী আবদুর রশিদ, এনডিপির আবদুল হামিদ কাদাইয়্যা, আবদুল লতিফ, খোরশেদ, বাগোয়ান ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতা কৃষ্ণ দত্ত,অমৃত তালুকদার, ইকবাল হোসেন খোকন, মোহাম্মদ মিয়া, নাসিম, পাহাড়তলী ইউনিয়নের মোহরম, কদলপুর ইউনিয়নের এনডিপির ওসমান, আরিফ বিল্ল্রাহ, গিয়াস উদ্দিন বাইল্যা তোতা, আকতার হোসেন, খোরশেদ আলম, ছাত্রলীগ নেতা চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী এস এম ফারুক। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে রাউজানের নোয়াপাড়ায় যুবলীগ নেতা মোবারক, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল আলম নুরু, প্রবাসী বিএনপি নেতা মোঃ মুছা, রাউজানের ছত্রপাড়ার বিএনপি নেতা আবুল হাশেম । আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালিন সরকারের শাসন আমলে গত ২৪ জানুয়ারী শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার সময়ে প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে।

অন্তবর্তীকালীন সরকারের শাসন আমলে রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এবি এম ফজলে করিম চৌধুরীর বাগান বাড়ীর কর্মচারী মোঃ ইউছুপকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সাবেক ছাত্রদল নেতা পোয়ার মোহাম্মদ চৌধুরী বাবুকে প্রকাশ্যে দিবালোকে হত্যার উদ্যোশে গুলি করে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে ছাত্রদল নেতা বাবু মারাত্বকভাবে আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ব্যবসায়ী, ইট ভাটার মালিক, প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে চাদাঁ আদায় করার ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসীরা সিন্ডিকেট করে পাহাড় টিলা ও কৃষি জমি কেটে মাটি বিক্রয় করছে। কর্ণফুলী নদী, হালদা নদী, সর্তা খাল, রাউজান খাল, খাসখালী খাল, কলমপতি খাল, মুখছড়ি খাল, ডাবুয়া খাল, বেরুলিয়া খাল, ভোমর ঢালা খাল, হরনাথ ছড়া খাল, ফটিকছড়ি খাল থেকে বালু উত্তোলন করছে পাওয়ার পাম্প বসিয়ে ড্রেজার দিয়ে । কোন প্রকার ইজারা না নিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। পাহাড় কাটা, টিলা কাটা, কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা, বালু উত্তোলনের টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে কদলপুরে একাধিক সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে । মাটি কাটার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বাছুলকে গুলি করে আহত করে সন্ত্রাসীরা। ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যাকান্ড ও সাবেক ছাত্রদল নেতা বাবুকে হত্যা প্রচষ্টার সাথে জড়িত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। বর্তমান অন্তবর্তীকালিন সরকারের শাসন আমলে রাউজানে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি প্রসঙ্গে রাউজান থানার নবাগত ওসি বশিরুল আলম বলেন, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ।