ঘুম ভেঙে গেলেও তন্দ্রাচ্ছন্নতা যেন ঘিরে থাকে। তন্দ্রাচ্ছন্নতা বা ঝিমুনি ভাব যেন আপনার পিছু ছাড়তেই চায় না। এ সমস্যা দূর করতে অনেকে ভরসা রাখছেন চা, কফিতে। তবুও কাটছে না খারাপ লাগার ভাব। এর নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ কিছু কারণ।
ঘুম থেকে উঠেই ক্লান্ত লাগার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। এটি সাধারণত আপনার ঘুমের মান বা দৈনন্দিন অভ্যাসের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। প্রধান কারণগুলোর মধ্যে কয়েকটি হলো-
১. পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর ও মস্তিষ্ক পুরোপুরি বিশ্রাম পায় না। এর ফলে সকালে ঘুম থেকে উঠার পরও ক্লান্তি অনুভূত হয়।
২. ঘুমের মানের সমস্যা: যদি গভীর ঘুমের পর্যায়ে বারবার ব্যাঘাত ঘটে, তবে আপনি পর্যাপ্ত সময় ঘুমালেও ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। এর কারণ হতে পারে স্লিপ অ্যাপনিয়া, নিদ্রাহীনতা (ইনসমনিয়া), বা ঘুমের সময়ে বারবার জেগে ওঠা।
৩. সার্কাডিয়ান রিদমের বিঘ্ন: আপনার শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি, যা সার্কাডিয়ান রিদম নামে পরিচিত, যদি বিঘ্নিত হয় (যেমন রাতে খুব দেরি করে ঘুমানো বা বারবার সময় পরিবর্তন করা), তবে আপনার ঘুমের চক্র ঠিকমতো কাজ করে না। এর ফলে আপনি ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন।
৪. শরীরের পানির অভাব (ডিহাইড্রেশন): পর্যাপ্ত পানি না পেলে শরীরের কোষগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, এবং ক্লান্তি ও দুর্বলতা দেখা দেয়।
৫. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: ঘুমানোর আগে ভারী খাবার খেলে বা অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পান করলে ঘুমের গুণমান নষ্ট হতে পারে, ফলে সকালে ক্লান্তি আসে।
৬. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা বিষণ্ণতা ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, এবং এর ফলে ঘুমের মান খারাপ হয়ে যায়।
৭. শারীরিক ব্যাধি: কিছু বিশেষ শারীরিক অসুস্থতা যেমন, থাইরয়েডের সমস্যা, অ্যানিমিয়া, ডায়াবেটিস, বা হৃদরোগ ক্লান্তির কারণ হতে পারে।
৮. ব্যায়ামের অভাব: পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়াম না করলে শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল বোধ করতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম ঘুমের মান উন্নত করে এবং শরীরকে সজীব রাখে।
এই সমস্যাগুলোর মধ্যে কোনটি আপনার সাথে মিলে যায় কিনা তা লক্ষ করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে পারেন। তবে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।