বিদেশিদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন সময় হলেই- মোমেন

গণতন্ত্র, নির্বাচন, মানবাধিকার পরিস্থিতিসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে বিদেশিদের মন্তব্যে ফের উষ্মা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। রাষ্ট্রদূতদের সতর্ক করে তিনি বলেন, সময় হলে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হবে। শনিবার রাজধানীর রমনাস্থ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন অফিস স্পাউসেস এসোসিয়েশন (ফোসা)-এর উদ্যোগে দিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল চ্যারিটি বাজার’- এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ গত নির্বাচনে রাশিয়ার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছে তাদের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য। ২০/২১ জন কূটনীতিককে তারা বহিষ্কার করেছে। তারা শক্তিশালী, সেজন্য এটি করতে পেরেছে। আমাদের সেই শক্তি নাই। সেজন্য ওই পথে যাইনি। তবে সময় হলে আমরাও অ্যাকশনে যাবো। বিদেশিদের উপদেশের প্রয়োজন নাই জানিয়ে তিনি বলেন, তারা বলতে পারেন, আমরা শুনতে পারি।

একটা সিস্টেম আছে, শিষ্টাচার আছে। তারা যদি কিছু বলতে চান, তারা সরকারকে জানাতে পারেন। গত ২২শে নভেম্বর সকালে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে সাহিত্যমেলার উদ্বোধন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, অন্য কোনো দেশের মানুষ নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে জানতে চান না। এখন কিন্তু আমরা কলোনিয়াল দেশ না, আমরা কলোনি না। সুতরাং তাদের (রাষ্ট্রদূত) সেটি মনে রাখতে হবে। তারা তাদের রীতি অনুযায়ী, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত যে রীতি, সেটা মেনে চলবেন। এর আগে ২১শে নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রদূতরা শিষ্টাচার সম্পর্কে অবগত এবং এ কারণে এটি গ্রহণযোগ্য নয়। এখন আমরা পরাধীন দেশ বা কলোনি নই এবং এটি তাদের মনে রাখা উচিত। তারা রীতি অনুযায়ী ব্যবহার করবে এটাই কাম্য।

ফোসা’র ইন্টারন্যাশনাল চ্যারিটি বাজার: এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কল্যাণমূলক সংগঠন ফরেন অফিস স্পাউসেস এসোসিয়েশন (ফোসা)-এর উদ্যোগে দিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল চ্যারিটি বাজার’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে রাজধানীর বেইলী রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমি অডিটোরিয়ামে চ্যারিটি বাজারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপি এবং ফোসা’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক মন্ত্রীর সহধর্মিণী সেলিনা মোমেন। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, ফোসা’র সভাপতি পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব)-এর সহধর্মিণী ফাহমিদা জেবিন সোমা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার এডমিরাল (অব.) খোরশেদ আলম, সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, ফোসা’র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ফোসা পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং দর্শনার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল দিনব্যাপী ওই আয়োজন। যেখানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও বুটিক পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় করা হয়। বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহের মাধ্যমে সংগৃহীত অন্যান্য দেশের পণ্যসামগ্রীও চ্যারিটি বাজারে স্থান পায়। ঢাকাস্থ বিদেশি দূতাবাসগুলোর মধ্যে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, প্যালেস্টাইন, পাকিস্তান, রাশিয়া, তুরস্ক, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের দূতাবাসও এই চ্যারিটি বাজারে অংশগ্রহণ করে। ফোসা’র সামাজিক ও কল্যাণমূলক উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। চ্যারিটি বাজার থেকে অর্জিত আয় আর্তমানবতার সেবায় ব্যয় করা হবে।