দ্রুতই তাইওয়ানকে একীভূত করার চেষ্টা করছে চীন: ব্লিনকেন

আগে যেমন মনে করা হয়েছিল তার চেয়ে অতি দ্রুততার সঙ্গে তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে একীভূত করার চেষ্টা করছে চীন। এমনটা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনিও ব্লিনকেন। তার মতে, বেইজিং সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাইওয়ানের বিষয়ে স্থিতিতাবস্থা আর গ্রহণযোগ্য নয়। রোববার বেইজিংয়ে কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসের উদ্বোধনী ভাষণ দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এ সময় শক্তি প্রয়োগ করে তাইওয়ানকে বেইজিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করার বিষয় তিনি প্রত্যাখ্যান করেননি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়েছে, স্বশাসিত দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখে চীন। তারা তাইওয়ানকে আবার নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করাতে চায়। কিন্তু তাইওয়ান নিজেকে চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হিসেবে দেখে। কারণ, তাদের নিজস্ব শাসন ব্যবস্থা আছে। পার্লামেন্ট আছে।

শাসন ব্যবস্থা আছে। দীর্ঘ সময় তারা তাদের শাসন ব্যবস্থাকে নিজেদের মতো পরিচালিত করেছে। কিন্তু কয়েক বছর হলো তাইওয়ানকে নিজেদের দখলে নেয়ার কথা জোরালোভাবে বলছেন চীনের নেতারা। এ অবস্থায় ওই দ্বীপাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক কৌশল নতুন করে সাজিয়েছে।
চীন যদি তাইওয়ানকে আক্রমণ করে তাহলে তাইওয়ানের সুরক্ষার পক্ষে অবস্থান নেবে যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসে এ কথা স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নীতিতে অস্পষ্টতা আছে। মঙ্গলবার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিজা রাইস উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বক্তব্য রাখেন অ্যান্টনিও ব্লিনকেন। তিনি বলেন, বেইজিং যদি তাইওয়ানকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একীভূত করতে না পারে, তার অর্থ হবে তারা জবরদস্তি এবং সম্ভবত শক্তি প্রয়োগ করতে পারে। এটাই স্থিতাবস্থাকে বিঘ্নিত করেছে এবং ভয়াবহ উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
ব্লিনকেন আরও বলেন, তাইওয়ানকে দেয়া প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে দ্বীপরাষ্ট্রটির আত্মরক্ষার সক্ষমতায় সমর্থন করবে। উল্লেখ্য, তাইওয়ান ও চীন ইস্যুতে সব সময়ই কূটনৈতিক টান টান এক রশির ওপর দিয়ে হাঁটছে ওয়াশিংটন। তাদের সরকারি নীতি তাইওয়ানে সামরিক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দেয় না। কিন্তু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বার বার জোর দিয়ে তাইওয়ানকে রক্ষার পক্ষে থাকার কথা বলে দৃশ্যত এর বিপরীত অবস্থান নিয়েছেন।

চীনে যখন এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয় কংগ্রেস চলমান তখন তাদেরকে নিয়ে মন্তব্য করলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনিও ব্লিনকেন। কমিউনিস্ট পার্টির ওই কংগ্রেসে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তৃতীয়বার ঐতিহাসিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। রোববার কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শি জিনপিং বলেছেন, আমাদের দেশের পুনরেকত্রীকরণ সম্পন্ন করতে হবে এবং তা অনুধাবন করতে হবে। আমরা গভীর আন্তরিকতার সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে একত্রিকরণ অব্যাহত রাখবো। সর্বোচ্চ পর্যায়ে আমরা শক্তির ব্যবহার পরিত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি কখনো দেবো না।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি আকস্মিকভাবে তাইওয়ান সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তারপর থেকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা কঠিন থেকে কঠিন অবস্থা পৌঁছেছে। ন্যান্সি পেলোসির সফরের জবাবে বড় মাত্রায় সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন। একে উচ্চ মাত্রায় উস্কানিমুলক বলে নিন্দা জানিয়েছে তাইওয়ান।