বাংলাদেশ ক্রিকেটে নাটক জমে উঠেছে। এবার গল্পের নায়ক-খলনায়ক দু’জনই টি-টোয়েন্টির সাবেক অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। নেতৃত্ব হারিয়েছেন আগেই, বিশ্বকাপ দলেও নাকি রাখা হচ্ছে না তাকে। এই ক্রিকেটারের ভাগ্যে তাহলে কি আছে! নীরববেই কি অবসরে যাবেন? বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)-এর সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, মাহমুদুল্লাহকে বিদায় তিনি মাঠ থেকেই দিতে চান। পাপন বলেন, ‘যদি তার (টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট) অবসর নিতেই হয় বা তাকে স্কোয়াডে সুযোগ দিতে না পারি, তাহলে অন্তত এতটুকু সুযোগ (মাঠ থেকে অবসর নেয়ার) তাকে দেয়া উচিত। এইটুকু সম্মান জানানো উচিত। কারণ, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অবদান খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বহু ম্যাচ জিতিয়েছে আমাদের।’ দেশের আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহীম সমালোচনা সইতে না পেরে হঠাৎ করে টি-টোয়েন্টি থেকে আবসর নিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছিল, তিনি হয়তো বিশ্বকাপ খেলে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরে যাবেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন মুশফিক।
বিষয়টি ভালো লাগেনি বিসিবি সভাপতির। তিনি বলেন, ‘মুশফিক অবসর (মাঠের বাইরে থেকে) নিয়েছে, এটা আমাদের কাছে খারাপ লাগে। আমি শেষ দিন পর্যন্ত বলে যাবো মুশফিক আমাদের সেরা ব্যাটার।’ অভিষেকের পর থেকে ১৫ বছরের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের হয়ে ১২১ ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদুল্লাহ। ২৩.৫৭ গড়ে ২ হাজার ১২২ রান করেছেন সাবেক এই টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। তবে বয়স যত বেড়েছে পারফরম্যান্সের ততই অবনতি হয়েছে। সবশেষ ১৬ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৮.৪ গড়ে ২৬১ রান করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। স্ট্রাইকরেট ১০১.৫৫। আর এই কারণে মাহমুদুল্লাহর দল থেকে বাদ পড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বকাপে না হলেও নিউজিল্যান্ডে আসন্ন ত্রিদেশী সিরিজে তার অবসরের ঘোষণা আসতে পারে। তবে সেটি হবে যদি তাকে দলে রাখা হয়! বিদেশের মাটিতে বিশ্বকাপ ক্যাম্প বিশ্বকাপ সামনে রেখে ১২ই সেপ্টেম্বর মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে শুরু হয়েছে জাতীয় দলের ক্যাম্প। তবে বৃষ্টির হানায় ক্যাম্পের কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। গতকাল সারাদিনই বৃষ্টি ছিল। ক্যাম্পের পরিচালক ও দলের নয়া টেকনিক্যাল কোচ শ্রীধরন শ্রীরাম পরিকল্পনা অনুসারে কোনো কাজই করতে পারেননি। তাই বিসিবি বৃষ্টির কারণে দেশের বাইরে ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেন, ‘বেসিক্যালি আমাদের এখানে তিনদিনের ক্যাম্প করার কথা ছিল। ওরা বললো করতে পারছে না। যেসব প্ল্যান ছিল একটাও করতে পারছে না, দু-একদিনের মধ্যে ঠিক হবে বলেও মনে হচ্ছে না। এটা নিয়ে আমরা বসেছিলাম। বিকল্প একটা ব্যবস্থা নিচ্ছি, এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। দেখি, আমরা অন্য কোনো জায়গায় প্র্যাকটিস করতে পারি কি না। ওরা তিন-চারদিন অন্য কোনো জায়গায় গিয়ে খেলতে চায় যেহেতু সামনে বিশ্বকাপ, তার আগে আবার অক্টোবরে ত্রিদেশীয় সিরিজ আছে। ওখানে গিয়েও যে করতে পারবে তারও সুযোগ নেই। দুই তারিখ গিয়ে পৌঁছাবে, তিন তারিখ তো বিশ্রাম নিতে হবে, এত বড় জার্নি। শুধু চার ও পাঁচ পাবে, ছয় তারিখ অপশনাল।’ তবে ক্যাম্প কোথায় হবে সেটি নিশ্চিত করেননি বিসিবি সভাপতি। যদিও জানা গেছে, বিসিবি দুটি স্থানের কথা ভাবছে। একটি আরব আমিরাত অন্যটি সিঙ্গাপুর। এই দুই জায়গা থেকে বাংলাদেশ দল সহজেই নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যেতে পারবে। দুটি দেশের ভিসা পাওয়াও সহজ হবে টাইগারদের জন্য। এ বিষয়ে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমরা বিদেশের মাটিতে ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখনো ঠিক করিনি যে কোথায় হবে। আমাদের ভাবনায় আছে দুবাই ও সিঙ্গাপুর। তবে কাল (আজ) আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। দল ঘোষণার সময়ই জানিয়ে দেবো কোথায় ক্যাম্প হবে।’ দেশের বাইরে হলেও ক্যাম্প করা কেন গুরুত্বপূর্ণ সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে যদি একটু প্র্যাকটিস করতে পারতো তাহলে ভালো হতো। যেহেতু আমাদের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট অনেক প্লেয়ারকে চিনেই না। কারো খেলাও দেখেনি। তার জন্যও বুঝতে সুবিধা হতো যে আসলে কম্বিনেশনটা কী হওয়া উচিত। এটা সে পারছে না এখানে। সেজন্য আজ একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’











