‘ধুয়ে-মুছে’ নতুন শুরু

হারতে হারতে দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে। চার-ছক্কার খেলাটা যেন ১৬ বছরে রপ্তই করতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে এবার সব ধুয়ে-মুছে এশিয়া কাপে নতুন শুরুর অপেক্ষায় টাইগাররা। আবারো দেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে সফল ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কাঁধে দেয়া হয়েছে নেতৃত্ব। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে এই ফরম্যাটের দায়িত্ব থেকে। ভারত থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে টি-টোয়েন্টির স্পেশালিস্ট টেকনিক্যাল কোচ শ্রীধরন শ্রীরামকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দলকে সাহস যোগাতে হাজির হয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। আজ এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শারজাহ স্টেডিয়ামে টাইগারদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে আসর শুরু করা আফগানরা বাংলাদেশকে হুমকিও দিয়ে রেখেছে। তবে টাইগারদের তরুণ সদস্য মেহেদী হাসান মিরাজ জানিয়ে দিলেন জয়ের জন্যই মাঠে নামবেন তারা।

এজন্য একক নয়, দলীয় লড়াইয়ের গুরুত্বটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। মিরাজ বলেন, ‘আমরা হ্যাঁ, অবশ্যই জিততে চাই। তবে দিন শেষে জিততে গেলে যেসব প্রসেস আছে। ব্যাটারদের রান করতে হবে, বোলারদের উইকেট নিতে হবে, কীভাবে একটা টিম জিততে পারে, সবাই একসাথে পারফর্ম করতে হবে।’
সাকিব আল হাসান নেতৃত্বে ফেরায় ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ এমনটাই আশা টাইগার ভক্তকূলের। তবে একা সাকিব কী করবেন যদি দলের অন্যরা নিজেদের অবদান রাখতে নাই পারে। ব্যর্থতার দরজা ভেঙে বের হতে হলে যে এক বা দু’জনের পারফরম্যান্সে হবে না তাও অকপটে জানিয়েছেন মিরাজ। তিনি বলেন, ‘দেখেন বাংলাদেশ টিম তখনই ভালো খেলে যখন আমরা একসাথে সবাই ভালো খেলি। এক/দুইজনের ব্যক্তি পারফর্ম দিয়ে কখনো দলের রেজাল্ট পক্ষে আনা যায় না। আর বিশেষ করে এরকম টুর্নামেন্টে তো কখনোই না।’ বাংলাদেশের বিপক্ষেও আফগানিস্তানের বোলাররা ব্যবধান গড়ে দিতে চাইবে। তবে বোলিং আক্রমণের দিক থেকে বাংলাদেশও থাকবে বেশ এগিয়ে। বিশেষ করে স্পিন বোলিংয়ে। যার ফলে আফগানিস্তান-বাংলাদেশের ম্যাচে বোলিং নয় বরং ব্যাটিংই ব্যবধান গড়ে দেবে বলে মনে করছেন টাইগার ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ।

কিন্তু ব্যাটিংয়ে যে বড় নড়বড়ে টিম টাইগার্স! তার ওপর দলের সেরা ওপেনার লিটন কুমার দাস ইনজুরিতে। আর তামিম ইকবাল তো অবসরই নিয়ে ফেলেছেন। তাই টাইগারদের অন্যতম ভাবনার জায়গা ওপেনিং। কে হবে এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গী? যতটা জানা গেছে স্বীকৃত ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকে সুযোগ দেয়া হতে পারে। তবে নতুন কিছুর আশায় ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে মুশফিকুর রহীমকেও। যে কিনা তার ১০০ ম্যাচের ক্যারিয়ারে একবারই ওপেন করেছেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ‘এ’ দলের সফরে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি পাওয়া নাঈম শেখকেও ফেরানো হতে পারে একাদশে। তিনে সাকিব, আর চারে সহঅধিনায়ক আফিফ হোসেনের খেলা অনেকটা নিশ্চিত। অভিজ্ঞতার কারণে সাবেক অধিনায়ক মাহমদুল্লাহ রিয়াদেরও একাদশে জায়গা অনেকটাই নিশ্চিত। একাদশে দেখা যেতে পারে দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা সাব্বির রহমানকেও। বোলিংয়ে সাকিবের সঙ্গে স্পিনে নাসুম আর মিরাজ হতে পারেন ভরসা। অন্যদিকে তিন পেসার নিয়ে খেললে আক্রমণে মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও ইবাদত হোসেনকে দেখা যেতে পারে। তবে শারজাহর উইকেটে স্পিনারদের দাপট তাই দুই পেসার নিয়েই একাদশ সাজাতে পারে টাইগাররা। এশিয়া কাপে টি-টায়েন্টি ফরম্যাটে এখনো আফগানিস্তানের বিপক্ষে কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। তবে ২০ ওভারের ক্রিকেটে দুই দলের এখন পর্যন্ত ৮ দেখায় ৫ জয় নিয়ে আফগানরাই এগিয়ে। বরাবরের মতো এবারও টাইগারদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে লেগ স্পিনার রশিদ খান। যদিও দলের নয়া কোচ শ্রীরাম নেটে ভারতীয় লেগ স্পিনারদের এনে দলের ব্যাটারদের প্রস্তুত করেছেন রশিদকে মোকাবিলার জন্য। যদিও শ্রীলঙ্কাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করা আফগানিস্তান হুংকার দিয়েছে বাংলাদেশকে হারিয়ে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার। আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী বলেছেন শ্রীলঙ্কার চেয়েও বড় ব্যবধানে সাকিবদের হারাতে আত্মবিশ্বাসী তারা। তবে তিনি জানিয়েছেন শারজাহর উইকেটে সুবিধা পাবে দুই দলই। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। এখনও হলফ করে বলতে পারছি না শারজাহর উইকেট কেমন হয়। কখনো মনে হয়েছে পুরোপুরি ব্যাটিং পিচ, কখনো আবার টার্নিং। বাংলাদেশ তাদের মাটিতে এমন উইকেটেই খেলে। ঘরের মাঠে তারা অনেক ম্যাচ খেলে। আবার আমরাও শারজাহতে অনেক ম্যাচ খেলেছি। এই মাঠ দুই দলের জন্যই সুবিধাজনক হবে।’