দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সামরিক মহড়া শুরু, টার্গেট উত্তর কোরিয়া

গত কয়েক বছরের মধ্যে সবথেকে বড় যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার যে কোনো হামলা প্রতিহত করতে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে এই মহড়া হচ্ছে বলে ধারনা পর্যবেক্ষকদের। মহড়ার জবাবে উত্তর কোরিয়া বড় ধরণের অস্ত্র পরীক্ষাও করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।

খবরে জানানো হয়েছে, ‘আলচি ফ্রিডম শিল্ড’ নামের মহড়াটি সোমবার সকালে শুরু হয়। আগামি ১লা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মহড়া চলার কথা রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইয়েয়োল গত মে মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়াকে তিনি ‘স্বাভাবিকে’ পরিণত করবেন এবং উত্তর কোরিয়ার হামলা ঠেকানোর জন্য দক্ষিণকে প্রস্তুত করবেন।

মূলত এ বছরই উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেটিকে সামনে রেখেই দক্ষিণ কোরিয়াকে নিয়ে মহড়া করছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশ যদিও এমনিতেও অনেক মহড়া করে। তবে এবারের মহড়া বেশ বড় আকারে হচ্ছে।

কোভিড সংক্রমণের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সামরিক মহড়া পিছিয়ে দেয়া হয়। তবে এই মহড়াকে হামলার প্রস্তুতি হিসেবেও মনে করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া পশ্চিম উপকূলের শহর ওনচন থেকে দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে মহড়া শুরু করার পরই এ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া।
সিউলের কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তর কোরিয়া এ বছর নজিরবিহীনভাবে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। যেকোনো সময় দেশটি সপ্তম পারমাণবিক পরীক্ষা চালাতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তার সরকার পিয়ংইয়ংয়ে অর্থনৈতিক সহায়তা দিতে চায়। তবে এ জন্য পিয়ংইয়ংকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। উত্তর কোরিয়া কড়াভাবে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। এ ধরনের প্রস্তাব দেয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সমালোচনাও করেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং।

সিউলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মিত্র দুই দেশ এই গরমে মাঠপর্যায়ে ১১টি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করবে। এর মধ্যে ব্রিগেড পর্যায়ের একজন থাকবেন। কয়েক হাজার সেনাও থাকবেন। সিউলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও বলছে, সিউলকে লক্ষ্য করেই উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সিউল বলছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্তকরণের শক্তি বাড়াবে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই’র কাছে ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা মহড়া চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান। ২০১৭ সালের পর এ ধরণের মহড়া এবারই প্রথম।