স্বাধীনতা বিরোধীরাই জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে ঃ হানিফ

শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আলোচনা সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালে তাঁর নেতৃত্বে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার কারণে স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে না হলে বাংলাদেশ কখনও স্বাধীন হতো না। যুদ্ধ বিধ্বস্ত পোড়ামাটির বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু সাড়ে ৩ বছরে যে অবস্থানে দাঁড় করিয়েছেন তা ইতিহাসে নজির। খুনি জিয়া-মোস্তাকসহ ৭১’এ যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী ও পরাজিত শক্তি তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এ রকম নারকীয় হত্যাকান্ড আর ঘটেনি। এ বর্বরতম হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায় যুক্ত হয়েছিল। শুধু রাষ্ট্র ক্ষমতার জন্য নয়, সমগ্র বাঙ্গালীর স্বপ্ন ও স্বাধীনতা নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। যারা এ ঘটনার নেপথ্যে ছিল কিংবা মদদ দিয়েছে তাদেরকের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। শোককে শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আজ ৭ আগস্ট ২০২২ ইংরেজি রোববার বকেল ৪টায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা ইউনিট কমান্ডের যৌথ উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন চত্ত¡রে আয়োজিত তৃতীয় দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সাহাবউদ্দিন মজুমদার রচিত ‘বাঙালা হতে বাংলাদেশ’ বিষয়ক মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু একমাত্র নেতা যিনি সমগ্র বাঙ্গালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। বর্তমান সময়ে দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনার বিকল্প বা সমকক্ষ কেউ নেই। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও উদ্দেশ্য হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। সমস্ত ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে াসতে হবে। দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে মহান মুক্তিযুদ্ধেও পক্ষের সকল শক্তিকে সজাগ থাকতে হবে। অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আলহাজ¦ আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানার কোন শেষ নেই। তিনি অত্যন্ত দুরদর্শী নেতা ছিলেন। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠাই তিনি আজীবন যুদ্ধ করে গেছেন। যে ব্যক্তি আজীবন দেশের স্বাধীনতা ও এদেশের মানুষের জন্য ত্যাগ করে গেছেন তাঁেকই সপরিবারে নিষ্ঠুরতম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। এ নারকীয় হত্যাকান্ডের নেপথ্যে ছিল খুন জিয়া-মোস্তাকরা। আমরা দূর্ভাগা জাতি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তারাই আজ ইতিহাস বিকৃত করছে। নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কে সামিল হতে হবে। জাতির পিতা হত্যাকারী, মদদদাতা ও ইতিহাস বিকৃতকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা জরুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আশরাফ উদ্দিন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায় যুক্ত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যেত। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তা হতে দেয়নি। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পিতার সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। যারা স্বাধীনতা বিরোধী ও বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যার মদদ দিয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। শোককে শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার এস.এম রশিদুল হক বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এ দেশের মাটি ও মানুষকে যেভাবে গভীর ভালোবাসার বন্ধনে উজ্জ্বীবিত করেছিলেন তা বিশ্বের ইতিহাসে নজির। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বলেই আমরা ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ নামক একটি রাষ্ট্র পেয়েছি। তাঁর জন্ম না হলে আজ আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম না। যারা এ দেশের স্বাধীনতা সহ্য করেনি তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করছে। আজ তারঁই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আলহাজ¦ আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আশরাফ উদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম. রশিদুল হক, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মাহফুজা আক্তার, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মাহমুদ সালাউদ্দিন চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলাউদ্দিন ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোঃ রিফাত উদ্দিন বাবু। আগামীকাল ৮ আগস্টের কর্মসূচী ঃ আগামী কাল ৮ আগস্ট সোমবার বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিতব্য ৪র্থ দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি। প্রধান বক্তা থাকবেন জনাব চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ. সালাম। বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ এনডিসি, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ও চট্টগ্রামস্থ সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার, ড. রাজীব রঞ্জন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ।