মায়ের দুঃখ ঘোচানোর আগেই চলে গেলেন পরপারে

হাটহাজারীর কেএস নজু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন মারুফ। থাকতেন চিকনদন্ডী ইউনিয়নের খন্দকিয়া পাড়ায় নানার বাড়িতে।

বাবার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। মায়ের স্বপ্ন ছিল, ছেলে বড় হয়ে মায়ের দুঃখ ঘোচাবে।
শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের খন্দকিয়া পাড়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, কেউ বিলাপ করছেন আর কেউ মা কামরুন নাহারকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কিছুক্ষণ পরপর চিৎকার করে উপস্থিত সবাইকে বলছেন- বুকের ধনকে ফিরিয়ে দিতে।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুরে মীরসরাইয়ের বড়তাকিয়া এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের যে ১১ আরোহী নিহত হন, তাদের একজন মারুফ। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মারুফ ছিলেন সবার বড়।

মারুফের মা বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, শুক্রবার সকালে যখন ঘুরতে বের হয়েছিলো তখনও আমি না করেছিলাম। জোর করে রেখে দিলে আমার ছেলে বেঁচে যেতো। যাওয়ার জন্য তাকে কোন টাকাও দেইনি। ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন ছিলো অনেক। বড় ছেলে হওয়ায় চাকরি করে আমার অভাবের সংসারে হাল ধরবে। কিন্ত সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না।

ছেলের বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের কাগজ ও পড়ালেখার বিভিন্ন সনদপত্র হাতে নিয়ে পাগলপ্রায় মা কামরুন নাহার বলেন, আমার ছেলে সেনাবাহিনীতে কাজ করতে চেয়েছিলো। কাজ করে আমার কষ্ট দূর করতে চেয়েছিলো। এজন্য স্কুলে বিএনসিসিতে যোগ দিয়েছিলো। এখন আমাদের কি হবে?

মারুফের মামা মো. হানিফ বলেন, আমাদের বাড়িতে ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছে মারুফ। বাবার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ নেই। আমরাই তাকে কষ্ট করে লালন-পালন করেছি। মারুফ স্বপ্ন দেখতো সেনাবাহিনীতে কাজ করবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না। সে যে ঘুরতে যাবে, তা জানতাম না।