এশিয়া কাপের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ, তবে…

এশিয়া কাপ শেষ পর্যন্ত কোথায় হবে! শ্রীলঙ্কায়, নাকি বাংলাদেশে? এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছেই। সবারই জানা এই আসরের আয়োজক লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। স্বাভাবিকভাবেই শ্রীলঙ্কাতেই হওয়ার কথা। কিন্তু দেশটিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইস্যুতে চরম সংকট তৈরি হয়েছে। দিন দিন পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। এরই মধ্যে ফের দেশটিতে জারি করা হয়েছে জরুরী অবস্থা। জনরোষে রাষ্ট্রপতি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের জন্য চলছে বিক্ষোভ। তেলের অভাবে চলছে না গাড়ি, চলছে তীব্র খাদ্য সংকট। যদিও এর মাঝেই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলকে আতিথীয়তা দিচ্ছে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড।

আর এশিয়া কাপ আয়োজনে অপরাগতার কথাও জানায়নি তারা। তবে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) নতুন ভেন্যু খুঁজবে, আর সেটি হতে পারে ঢাকা। এসিসি চাইলে আয়োজন করা যাবে কিনা তা নিয়ে ভাববে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এমনিট জানিয়েছেন বিসিবি’র মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটু। আর বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘আসলে এশিয়া কাপ শ্রীলঙ্কা আয়োজন করবে না এমন কথা তারা বলেনি। এমনকি এসিসিও এ বিষয়ে কোন কিছু বিসিবিকে জানায়নি। যদি শ্রীলঙ্কা আয়োজন করতে না পারে তাহলে নতুন ভেন্যু কী হবে সেটির সিদ্ধান্ত নিবে এসিসি। যদি বাংলাদেশকে তারা প্রস্তাব করে তাহলে আমরা ভাববো।’
বিসিবির মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটু জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপ আয়োজনে ব্যর্থ হলে এবং এসিসি চাইলে এ নিয়ে ভাববে বিসিবি। এশিয়া কাপ আয়োজনের প্রস্তাব পেলে বিসিবি প্রস্তুত কিনা তা নিয়ে তানভীর আহমেদ টিটু বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে শ্রীলঙ্কা ব্যর্থ হয় কিনা সেটি। যদি তারা আয়োজন করতে না পারে তাহলে এসিসি যদি বলে বাংলাদেশ আয়োজন করবে তাহলে আমাদের ভাবতে হবে। আমাদের মূল স্টেডিয়াম মিরপুর শেরে বাংলায় চলছে নতুন উইকেট নির্মাণের কাজ। যদি আমরা প্রস্তাব পাই তাহলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাঠ প্রস্তুত করা যাবে কিনা সেটিও একটি বিষয়। যদিও আমাদের বোর্ড সভাপতি (নাজমুল হাসান পাপন) বলেছেন বিসিবি আয়োজনের প্রস্তাব পেলে প্রস্তুত আছে। তারপরও দেরি হয়ে গেলে সেটি নিয়ে আমাদেরও ভাবতে হবে যে দ্রুততম সময়ে এত বড় আসর আয়োজন করা যাবে কিনা!’ এছাড়াও তানভীর আহমেদ টিটু বিষয়টি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের ওপর ছাড়ছেন। তিনি বলেন, ‘দেখেন এখানে বিসিবির কোনো মন্তব্য করা একেবারেই ঠিক হবে না। শ্রীলঙ্কা নাকি বাংলাদেশ সেটি এসিসিই সিদ্ধান্ত জানাক। তাহলেই ভালো।’
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার পর পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এশিয়া কাপের পথটা মসৃণই করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)। তবে আবারও এ নিয়ে নাটকীয়তা, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে বাংলাদেশই বিকল্প ভেন্যু। যদিও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এ ধরণের কোনো প্রস্তাব এখনো পায়নি। ২৭শে আগস্ট থেকে ১২ই সেপ্টেম্বর সময়কালকে এশিয়া কাপের এবারে আসরের সম্ভাব্য সূচি হিসেবে নির্ধারণ করেছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে বাঁক বদলাচ্ছে ক্রমশ। যে কারণে অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তানকে লঙ্কান বোর্ডের আতিথেয়তা দেওয়ার পর চলতি মাসের শেষদিকে এশিয়া কাপ নিয়ে পাকা সিদ্ধান্তে আসবে এসিসি। কিন্তু তার আগেই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিকল্প ভেন্যু হিসেবে বাংলাদেশকে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছে।
ভারতীয় এক প্রতিবেদনে ১৫তম এশিয়া কাপ বাংলাদেশে আয়োজন হচ্ছে বলেও দাবি করা হয়েছে। সেখানে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তারও বক্তব্য ছিল। তবে বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা না বলার পরে প্রস্তাব আসবে। তারা এখনো না বলেনি। সম্ভবত বর্তমান প্রেক্ষাপটে শ্রীলঙ্কার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিউজটা করেছে। এটা তো সরকারের সঙ্গে বোর্ডের কোনো বিষয় না। বোর্ড যদি না বলে তবে আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। আমরা কিছু বললে সেটা স্বপ্রণোদিত হয়ে বলা হবে। সেটা বলা ঠিক হবে না। এর আগেও পরিবর্তনের কথা শোনা গেছে। তবে সেটা হয় নাই। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হয়েছে। এখন এশিয়া কাপের মতো টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য পরিস্থিতি কেমন সেটা তো আমরা এখান থেকে বলতে পারবো না। যদি ওখানে না হয় তবে বেশির ভাগ সদস্য যেখানে বলবে সেখানে হবে।’