‘হেঁটে’ই পাড়া বদল করলো সাংহাইয়ের এই শতাব্দী প্রাচীন বাড়ি

সাংহাইয়ের শতাব্দী প্রাচীন ৩,৮০০ টনের একটি বিল্ডিংকে সম্পূর্ণভাবে মাটি থেকে তুলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাকে এককথায় বলে স্ট্রাকচারাল মুভিং। কোনো ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণের জন্য সেই ভবনটিকে ভিত্তি থেকে তুলে অন্যত্র সরানোর জন্য এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয় । সাংহাইয়ের শতাব্দী প্রাচীন এই বাড়িটি পুরনো স্থাপত্যের নিদর্শন বহন করে চলেছে । বাড়ির বয়স অনেক বেশি। যেকোনও মুহূর্তে পুরনো স্থাপত্যে চিড় ধরতে পারত। ক্ষতিও হতে পারত। কিন্তু ওয়াকিং মেশিন নামক একটি প্রযুক্তির সাহায্যে এই অসাধ্য সাধন করা হয়েছে। একটি সংস্কার প্রকল্পের অংশ হিসাবে, ৮ জুলাই বিল্ডিংটিকে তার নতুন অবস্থানে স্থাপন করা হলো। এটি শহরের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ভারী গাঁথনি কাঠামো পরিবহন প্রকল্প (heaviest masonry structure transportation project)।

সুনির্দিষ্ট পরিমাপ এবং গণনার পরে, ৩,৮০০-টন বিল্ডিংটিকে নির্ধারিত অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য বিল্ডিংয়ের নীচে স্লাইডিং রেল সেট করা হয়েছিল।
এভাবে একটি বাড়িকে রাস্তা দিয়ে হেঁটে পাড়া বদলাতে দেখে অবাক হয়েছেন স্থানীয় মানুষ। ২০২০ সালে, সাংহাই একই ‘ওয়াকিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরেকটি বিল্ডিং সরিয়ে নিয়েছিল। শহরের পূর্ব হুয়াংপু জেলার একটি ৮৫ বছর বয়সী পাঁচ তলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনকে সেইসময়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। এই ওয়াকিং মেশিন রোবোটিক পায়ের মতো কাজ করে। তারা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পর্যায়ক্রমে উপরে এবং নীচে উঠতে পারে , ঠিক মানুষ যেমন হাঁটাচলা করে । প্রকল্পের প্রধান প্রযুক্তিগত তত্ত্বাবধায়ক ল্যান উজি সিএনএনকে বলেছিলেন, স্থানান্তরের সময় ভবনটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করেছে সেন্সর,অনেকটা ক্রাচের মতো। যাতে বিল্ডিংটি দাঁড়াতে পারে এবং তারপর হাঁটতে পারে। বন্যার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশংকা থাকলেও কোনো বিল্ডিংকে একইভাবে স্থানান্তর করা সম্ভব। যদিও প্রায় সব কিছুই কাঠামোগতভাবে সরানো যেতে পারে, তা সে পুরানো গীর্জা হোক বা কোনো পারমাণবিক চুল্লি। টেলিফোন কোম্পানির সদর দফতর থেকে বিমানবন্দর টার্মিনাল পর্যন্ত একাধিক ভারী কাঠামোকে ইঞ্জিনিয়াররা সংরক্ষণের জন্য এইভাবে অন্যত্র সরিয়ে অভূতপূর্ব কৃতিত্ব অর্জন করেছেন ।