তুরস্কের নতুন সিদ্ধান্তে বদলে গেল সমীকরণ

পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে আসছিল সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। ইউক্রেন সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে দেশ দুটি পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়ার যে আবেদন করেছে, তার মধ্যদিয়ে তাদের সেই নিরপেক্ষতা বাতিল হয়ে গেছে। কিন্তু ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার পথে অপ্রত্যাশিত এক বাধার মুখে পড়েছে দেশ দুটি। আর এ বাধার নাম তুরস্ক।

তবে অবশেষে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদ আবেদনে সমর্থন দিতে সম্মত হয়েছে তুরস্ক। যৌথ নিরাপত্তা চুক্তিও স্বাক্ষর করেছেন দেশ তিনটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানায়, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিসটো, সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন এবং ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ মঙ্গলবার (২৮ জুন) স্পেনের মাদ্রিদে ন্যাটো সম্মেলন চলাকালে এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঐক্য প্রদর্শনের লক্ষ্যে ৩০ নেতার সমাবেশে অচলাবস্থা এড়াতে মাদ্রিদে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে চার ঘণ্টা আলোচনার পর এ অগ্রগতি আসে।

ন্যাটোপ্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন জঙ্গিদের তুরস্কের হাতে তুলে দেয়ার অনুরোধে রাজি হয়েছে সুইডেন। আর এ কারণেই মূলত তুরস্কের সমর্থন পেয়েছে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। খবর বিবিসির।

স্পেনের রাজপ্রাসাদে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের অভ্যর্থনা জানান রাজা পিলিপ ওরানি লেটিজিয়া। এ সময় ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন। সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ ন্যাটোর অন্যান্য দেশের নেতারাও।

সবাইকে রাতের খাবারে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাজা ফিলিপ। তবে এতে উপস্থিত ছিলেন না ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। কারণ, তিনি তখন তুরস্ক, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এক চুক্তি নিয়ে ব্যস্ত।

ইউক্রেনে রুশ অভিযানের জেরে পার্শ্ববর্তী দেশ ফিনল্যান্ড নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে ন্যাটো জোটে যোগ দেয়ার আবেদন করে। একই পথে হাঁটে সুইডেনও। কিন্তু তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ন্যাটোভুক্ত দেশ তুরস্ক।

অবশেষে সব বাধা কাটিয়ে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। দেশ দুটির ন্যাটোর সদস্যপদ আবেদনের ওপর থেকে ভেটো তুলে নিতে সম্মত হয়েছে তুরস্ক। যার অর্থ হেলসিঙ্কি এবং স্টকহোম সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের জন্য এখন তাদের আবেদন নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে।