বিভিন্ন পর্ষদের প্রধানবৃন্দের সাথে চবি উপাচার্যের মতবিনিময়

চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী একাডেমিক ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের অগ্রগতি, অর্জন ও সম্ভাবনা এবং বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও সামগ্রিক বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ডিনবৃন্দ, প্রভোস্ট/ওয়ার্ডেনবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি/ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, প্রক্টরিয়াল বডি, সকল অফিস প্রধান, শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সাথে ৮ মে ২০১৯ বেলা ১১ টায় উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এ সময় চবি মাননীয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার উপস্থিত ছিলেন।
মাননীয় উপাচার্য তাঁর ভাষণের শুরুতে উপস্থিত সকলকে স্বাগত ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক অগ্রগতি, অর্জন ও সম্ভাবনার বিভিন্ন দিকসহ সামগ্রিক বিষয়ে আলোকপাত করে বলেন, উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর বিশ^বিদ্যালয় পরিবারের সকলকে সাথে নিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক এবং ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নেযে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় তা এখন দৃশ্যমান। উপাচার্য হিসেবে তাঁরদৃঢ় ও সাহসী পদক্ষেপ এবং কার্যক্রমের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শতভাগ স্থিতিশীলতা নিশ্চিত রাখা, কেন্দ্রীয়ভাবে বিভাগ ও ইনস্টিটিউট গুলোতে মনিটরিং জোরদার ও প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট এখন প্রায় শূণ্যের কোটায়। বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ প্রযুক্তি নির্ভর করার লক্ষে চালু করা হয়েছে আইসিটি সেলসহ সর্বাধুনিক ওচা৬ ল্যাব। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের সর্ববৃহৎ হাইটেক পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং এর জন্য ১০০ একর জায়গা ইতোমধ্যেই সিন্ডিকেট অনুমোদনের মাধ্যমে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।তিনি আরও বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের গবেষণা খাতকে অধিকতর গুরুত্বদিয়ে এ খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে নতুন নতুন অনুষদ, বিভাগ ও ইনস্টিটিউট। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অটোমেশন পদ্ধতিতে শতভাগ স্বচ্ছ ও নির্ভূলভাবে এবং এন্টি প্রক্সি অ্যাপস এর মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করা হয়েছে।শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল আইডি কার্ড প্রদানসহ যাবতীয় তথ্য সমৃদ্ধ অ্যাপস চালু করা হয়েছে।প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ই-লার্ণিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয় পরিবহন পুলে এসি বাসসহ সর্বমোট ২১টি গাড়ি সংযোজনসহ পরিবহন পুলের বাসগুলোকে একটি অ্যাপস এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এতে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মকর্মচারীরা মোবাইলেই প্রত্যাশিত বাসের অবস্থান জানতে পারবে। মাননীয় উপাচার্য বলেন, স্বাস্থ্য সেবার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চবি মেডিকেল সেন্টারের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ অভিজ্ঞ নতুন চিকিৎসক নিয়োগ, রোগ নির্ণয়ের অথ্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন, শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্টুডেন্ট কাউন্সেলিং সেন্টার’ স্থাপনসহ বিশ^বিদ্যালয় পরিবারের সকলের জন্য চিকিৎসাসেবা প্রদানের সুব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত সীমানা নির্ধারণের মাধ্যমে বেদখল হয়ে যাওয়া প্রায় ৫০০ একর জমি উদ্ধার করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৫০ বছরের মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ অতি দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। মাননীয় উপাচার্য বলেন, বিশ^বিদ্যালয়কে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রভাবমুক্ত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের দৃশ্যমান বাস্তবায়ন করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি এবং মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মারক হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছে ‘জয় বাংলা’ ভাস্কর্য। বঙ্গবন্ধুর পরিবারবর্গের স্মৃতিকে প্রজন্মের সন্তানদের কাছে চির অম্লান করে রাখার প্রয়াসে তাঁদের নামে বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। মাননীয় উপাচার্য বলেন, শতভাগ সততা, স্বচ্ছতা ও জাবাবদিহিতার মাধ্যমে বিশ^বিদ্যালয় বর্তমান প্রশাসন বিশ^বিদ্যালয়ের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে কাজ করে যাচ্ছে। একটি কুচক্রিমহল তাদের বিশেষ স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিশ^বিদ্যালয় সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে বিশ^বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। মাননীয় উপাচার্য সকল ধরণের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাকে প্রতিহত করে সত্যকে ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক, নান্দনিক ও জ্ঞান-গবেষণায় সমৃদ্ধ চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের এই অগ্রযাত্রা ভবিষ্যতেও অব্যহত রাখতে বিশ^বিদ্যালয় পরিবারের সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত বক্তাগণ তাঁদের বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে বিগত ৫৩ বছরের ইতিহাসে বিশ^বিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এ উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।