‘নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষাও থাকবে, মূল্যায়নও থাকবে’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে কোনো পরীক্ষাই থাকবে না তা ঠিক নয়। অনেক পরীক্ষাই থাকবে, আবার অনেক পরীক্ষাই থাকবে না। যেখানে পরীক্ষা থাকবে না, সেখানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে।

রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সোমবার (২০ জুন) ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ কার্যক্রমের পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

ভার্চুয়াল মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে সরাসরি অংশ নেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে এখনো হয়তো অনেকের অনেক রকম সন্দেহ, সংশয় রয়েছে। অধিকাংশ মানুষ ভালো বলছেন, আবার অনেকেরই সংশয় রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন— পরীক্ষা থাকবে না। তাহলে কেমন হলো? পরীক্ষা থাকবে না, আসলে তা ঠিক নয়। পরীক্ষা থাকবে না তার মানে মূল্যায়ন থাকবে না তা নয়। ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষকদের হাতে ধারাবাহিক মূল্যায়নের যে অংশ থাকবে তাহলে কী শিক্ষকদের হাতে জিম্মি হয়ে যাব? শিক্ষকদের প্রতি আমাদের যেমন সম্মান থাকতে হবে, তেমনি আস্থাও রাখতে হবে। হ্যাঁ, কোথাও কোথাও আস্থাহীনতা ঘটে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সেখানে যেন সমস্যা না হয় সেটা দেখেই আমরা শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা সামগ্রিকভাবে শিক্ষার একটা গুণগত মানের পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। অনেকের চিন্তা হলো— করে করে শিখবে, তাহলে কী হবে? আমরা অনেক কিছু মুখস্ত করে শিখেছি। কিন্তু মনে রাখতে পারিনি। এই যে প্রয়োগ শিখবে, যা শিখবে তা ধারণ করতে পারবে। আমার মনে হয়, আমরা এ শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধু যেমন চেয়েছিলেন সেভাবে মানুষ করতে পারব। ঔপনিবেশিক শিক্ষা নয়, স্বাধীন দেশের স্বাধীন শিক্ষা শেখাতে হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনস্ক হবে, মানবিক মানুষ হবে। ঠিক তেমন মানুষ আমরা গড়ে তুলতে পারব।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ কার্যক্রমের মাধ্যমে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শিক্ষার্থীরা জানতে পারছে, শুধু ইতিহাস পড়ে তা জানা যেতো না। আর সে কারণে নতুন শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতা ভিত্তিক শিক্ষক্রমকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন, সক্রিয় শিখনকে বেশি গরুত্ব দিয়ে আমার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীরা যেভাবে ইতিহাস জেনেছে, শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে চিন্তা করতে, প্রশ্ন করতে শিখেছে। কীভাবে শিখতে হবে তাও জানতে হছে। সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে মানুষের সঙ্গে মেশা, মানুষের সঙ্গে আলাপ করা শিখছে। কীভাবে উপস্থাপন করবে তা শিখেছে। এ পুরো প্যাকেজ সুন্দরকরে দলগতভাবে উপস্থান করা এই যে দক্ষতা আমাদের বিশাল অর্জন। অসংখ্য দক্ষতা অর্জন করেছে। আমাদের শুধু একটি প্রকল্প নয়, অনেক প্রকল্পের মধ্যে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করবে। আমরা যোগ্য মানুষ করতে পারব।

অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।