গুণগত শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে হবে

চট্টগ্রাম: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেছেন, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে গুণগত শিক্ষার বিকল্প নেই। গতানুগতিক শিক্ষা থেকে বেরিয়ে যুগোপযোগী শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, যে যত বেশি জানবে, চাকরির বাজারে সে এগিয়ে থাকবে। বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হয়েছে, আমাদের উচ্চ শিক্ষিতদের সংখ্যা অনেক দেশের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। বাংলাদেশ এখন আর হেনরি কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ি নয় বরং উন্নয়নের রোল মডেল। মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সোনার বাংলার যে স্বপ্ন রচিত হয়েছিলো তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় তা আজ বাস্তব রূপ লাভ করেছে। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে আমাদেরকে দক্ষ ও বিশ্বমানের গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিকেলে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এসিউরেন্স সেলের (আইকিউএসি) উদ্যোগে আয়োজিত ‘অ্যামপ্লয়াবিলিটি স্কিল এবং ক্যারিয়ার গাইডেন্স’ শীর্ষক সেমিনারে কি-নোট স্পিকারের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের আরও বলেন, উচ্চশিক্ষিত তরুণদের বেকারত্বের অন্যতম কারণ হলো অদক্ষতা। একাডেমিক শিক্ষার বাইরেও সমসাময়িক বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের জন্য পৃথিবীর সফলতম ব্যক্তিদের আত্মজীবনী ও তাদের লেখা অনুপ্রেরণামূলক গ্রন্থসমূহ থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে। প্রযুক্তি ও ভাষাগত দক্ষতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য ও যোগাযোগ দক্ষতার জন্য নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস তৈরি করে কারিকুলাম, কো-কারিকুলাম ও এক্সটা কারিকুলামের সমন্বয়ে মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের জোর দেওয়া উচিৎ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউনিভার্সিটি ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কোলাবরেশন বাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আলোচনা করে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করা উচিৎ। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় গুরুত্ব দিতে হবে। গবেষণাধর্মী শিক্ষা অর্জন করতে না পারলে বর্তমান প্রতিযোগিতার বিশ্বে সফলতা অর্জন সম্ভব নয়। এসময় তিনি তরুণ গ্র্যাজুয়েটদেরকে সফট এবং হার্ড উভয়ক্ষেত্রে দক্ষতার অর্জনের পরামর্শ দেন এবং কর্মসংস্থানের প্রকৃতি নিয়ে আলোকপাত করেন। কর্মক্ষেত্রে মানসিক বিকাশের জন্য উন্মুক্ত মানসিকতার ওপর জোর দেন, যা একজন কর্মচারী কর্মক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা এবং অনভিপ্রেত কিছু ভুল থেকে শিখতে পারে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হক আমন্ত্রিত অতিথি ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এসময় তিনি স্নাতকদের তাদের নির্বাচিত পেশায় কর্মসংস্থানে সাফল্য অর্জনের জন্য একটি কৌশলগত পরিকল্পনা গঠনের পরামর্শ দেন।

আইকিউএসি’র পরিচালক এবং সেমিনারের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শওকতুল মেহের প্রধান বক্তাকে সমসাময়িক বিষয় বেছে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং সাফল্যের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে নিজেকে জানা, যাচাই করা এবং লক্ষ্য ঠিক করার পরামর্শ দেন।

সেমিনারে উপাচার্য এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ ড. শরীফ আশরাফউজ্জামান, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।