চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের র‌্যালি ও সভা

নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস-২০২২ উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে আজ ২৯ মে রোববার বিকেল ৩টায় এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হবে’। র‌্যালি শেষে ইয়ং পওয়ার ইন স্যোশাল এ্যাকশন-ইপসার সহযোগিতায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আয়োজনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত¡াবধায়ক সুজন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার, এমওসিএস ডা. মোঃ ওয়াজেদ চৌধুরী অভি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এএফএম জাহিদ, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র হেলথ এডুকেশন অফিসার থোয়াইনু মং মার্মা, হেলথ এডুকেটর কাজী মাসুদুল আলম, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর টিটু কান্তি পাল, স্টোর ইনচার্জ জাহেদুল ইসলাম, ইপসা’র সুখী জীবন প্রোগ্রাম ম্যানেজার সবুজ চাকমা, প্রোগ্রাম অফিসার মাহিনুর আক্তার, ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর সাহেদা খালেদ, ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর বিউটি আক্তার কেয়া ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারীবৃন্দ। র‌্যালি পরবর্তী আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, প্রশিক্ষিত ধাত্রীর সঙ্কট রয়েই গেছে। শহরাঞ্চলে হাসপাতাল ও ক্লিনিকভিত্তিক সন্তান প্রসবের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে অদক্ষ ও অপ্রশক্ষিত ধাত্রী দিয়েই চলছে সন্তন প্রসবের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এতে ঝুঁকিতে থাকছেন প্রসূতি মা ও শিশু। প্রতিটি মৃত্যুই অনাকাঙ্খিত। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে নারীর পাশাপাশি পুরুষদেরও সচেতন হতে হবে। কারণ পুরুষরা এখনও পরিবারের কর্তা হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। এ বিষয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। নিরাপদ মাতৃস্বাস্থ্য, মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসসহ নবজাতকের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়ে সকল নারীর জন্য নিরাপদ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারলে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস সফল হবে। তিনি বলেন, প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ, খিচুনী, গর্ভকালীন জটিলতা, ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা ও পরিবারের অবহেলা মাতৃমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। বাসাবাড়িতেই বেশির ভাগ গর্ভজনিত মৃত্যু হয়ে থাকে। প্রসব পরবর্তী সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সকল মাতৃমৃত্যুর ৫৫ ভাগ মৃত্যুই ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটে থাকে। প্রাক গর্ভধারণ ও গর্ভকালীন যতেœর বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান এড়িয়ে চলতে হবে। অন্যান্য বক্তারা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ মায়ের ক্ষেত্রে গর্ভধারণ পরীক্ষা করতে হবে। প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের প্রসব পরিকল্পনা সম্পন্ন করতে হবে। আয়রন, ফলিক এসিড এবং ক্যাসসিয়াম গর্ভকালীন সময় নিশ্চিত করা দরকার। গর্ভকালীন সময় কমপক্ষে চারবার প্রশিক্ষিত ধাত্রী দ্বারা মানসম্মত এএনসি সেবা দিতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই জরুরী প্রসব সেবা কেন্দ্রে প্রসব করাতে হবে। মিডওয়াইফারি শিক্ষা ও সেবার ক্ষেত্র বাড়াতে হবে।