নাইক্ষ্যংছড়িতে মাদরাসা এক শিক্ষার্থী ইভটিজিং এর শিকার : আটক-২

কায়সার হামিদ মানিক, কক্সবাজার প্রতিনিধি। নাইক্ষ্যংছড়ি মহিলা মাদ্রাসায় ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং, শ্লীলতাহানী ও নির্যাতনের অভিযোগে ২ যুবককে আটক করেছে পুলিশ। রোববার (২৯ মে ) সকাল সাড়ে ১০টায় মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ২ বখাটে যুবকের ইভটিজিং এর শিকার হন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। আটককৃত যুবকরা হলেন- রামুর কচ্ছপিয় ইউনিয়নের নাপিতের চরের বাসিন্দা মো. শাহ আলমের পুত্র সাইফুল ইসলাম (১৮), একি এলাকার আব্দুল মালেকের পুত্র ড্রাইভার মু,দেলোয়ার (২০)। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন ফারুকী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইভটিজিং ও নির্যাতনের এর শিকার শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশি হেফাজতে দেয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও ছাত্রনেতা রেজাউল করিম ও এম,এন সেলিম জানান, অভিযুক্ত দুই যুবকের মধ্যে সাইফুল নামে যুবক ইভটিজিং এ লিপ্ত রয়েছেন দেলোয়ার নামে যুবকটি একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক হিসেবে পুরোদমে ইভটিজিং এ সহযোগিতা হিসেবে সাহায্য করেছেন। তারা সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে মাদ্রাসার গেইটে এসে শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করে। ওই সময় শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে বখাটেরা প্রথমে ভুক্তভুগি শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানী করার উদ্যোশে পরিহিত বোরকা ধরে টানাহেঁচড়া করে। তারপর শিক্ষার্থীর ডাক-চিৎকারে প্রত্যক্ষদর্শীরা শিক্ষার্থীকে উদ্ধার ও বখাটেদের আটক করে। তারা আরো জানান, খবর পেয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন ফারুকী ,মাদরাসা সমাজ পরিচালনা কমিটির সদস্য সেলিম উদ্দীন ওরফে সোনা মিয়াসহ কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা শিক্ষার্থী ও বখাটেদের মাদরাসায় নিয়ে যান এবং নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশে খবর দেন। কিছুক্ষণের মধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দীমান বড়ুয়াসহ সঙ্গীয় ফোর্স মাদরাসায় উপস্থিত হয়ে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ শোনেন। এ সময় অভিযুক্তরা অপরাধ স্বীকার করলে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যান। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, ছেলাটা আমার একই এলাকার। অনেক দিন যাবত আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। প্রথমে আমার ভাল লাগলেও পরে জানতে পারি যে, তার চরিত্র তেমন ভাল নয় আর আমি অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তাই আমি এবং আমার পরিবার প্রস্তাব বিষয়টি প্রত্যাখান করলে আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি প্রদর্শন করে। আমাকে মাদরাসা যাওয়ার পথে প্রায় সময় উত্যক্ত করতে থাকে। আমি মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার নিরাপত্তা আশা করছি সংশ্লিষ্টদের কাছে। অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন ফারুকী বলেন, ছাত্রীকে ইভটিজিং, শ্লীলতাহানী ও নির্যাতনের অভিযোগ এর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেয়েছি। শুধু আজ নয়, এর আগেও এমন অভিযোগ শোনা গেছে। ছাত্রীরা নিরাপত্তার ভয়ে সাধারণত প্রকাশ্যে অভিযোগ করে না। তিনি বলেন, সাইফুল ইসলাম (১৮),ড্রাইভার দেলোয়ার (২০) নামের দুই যুবক মাদরাসা সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এসব অপরাধ করেছে বলে মনে হচ্ছে। এদিকে সকালের ঘটনাটি জানতে পেরে নাইক্ষ্যংছড়ি এম,এ কালাম সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার ক্ষোভ প্রকাশ করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন। এসময় তিনি বলেন, কে কার ছেলে, কোন দলের তা জানার দরকার নেই । অপরাধীদের শাস্তি এবং আইনের আওতায় আনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব। নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টানটু সাহা বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিভাবক , অভিযুক্তদের অভিভাবক ,সমাজ প্রতিনিধি এবং মাদরাসা শিক্ষকদের নিয়ে তদন্তের বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। তবে কি সিদ্ধান্ত আসবে তা এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। পরে জানানো হবে বলে জানান তিনি। তবে অভিযুক্ত দুইজন যুবক থানা হেফাজতে রয়েছেন।