উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবে জাতিসংঘে চীন ও রাশিয়ার ভেটো

উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবে জাতিসংঘে ভেটো দিয়েছে চীন ও রাশিয়া। দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে উত্থাপন করা হয়। কিন্তু এ প্রস্তাবে ওই দুটি দেশ ভেটো দেয়ার ফলে পশ্চিমা কূটনীতিকরা আশংকা করছেন, পিয়ংইয়ং এতে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে। বুধবারও উত্তর কোরিয়া আন্তঃমহাদেশীয় ব্যাপক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। এ ছাড়া সম্প্রতি দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।

বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে, তারা এমন সব ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করছে বা তাদের হাতে এমন সব ক্ষেপণাস্ত্র আছে, যা সরাসরি ইউরোপে ও যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম। এ জন্য উত্তর কোরিয়া যে পরিমাণ তেল আমদানি করতে পারে, তা কমিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে নিরাপত্তা পরিষদে ওই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের মোট ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৩টি সদস্যই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। কিন্তু দুই সদস্য চীন ও রাশিয়া ভেটো দেয়। এতে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র পর্যন্ত বিস্মিত।

কারণ, উত্তর কোরিয়ার এমন উন্মত্ততার বিরোধিতা করেনি চীন ও রাশিয়া।
উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন। ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের সম্পর্ক তলানিতে চলে গেছে। নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবে চীন ও রাশিয়া বলেছে, তারা এত কঠোর নিষেধাজ্ঞার চেয়ে ‘নন বাইন্ডিং’ কোনো পদক্ষেপের পক্ষে। জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেছেন, একপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন শুধু যুক্তরাষ্ট্রের একার জন্য অনুচিত। এ বিষয়ে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করা উচিত। তিনি হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে তাতে উত্তেজনা বাড়বে এবং উত্তর কোরিয়ায় মানবিক সঙ্কট দেখা দেবে। যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাব এনে যুদ্ধের একটি আবহ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এর মধ্য দিয়ে চীনকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

অন্যদিকে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া অভিযোগ করেছেন, উত্তর কোরিয়া শত্রুতাপূর্ণ কর্মকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু সেই আহ্বানকে উপেক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, তারা নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়া ছাড়া সংকট সমাধানের আর কোনো পথই দেখছে না।

জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বার বারই বলে আসছে, কোনো পূর্ব শর্ত ছাড়া তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ রাখে।