লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী: বাধ্য হয়েই আশ্রয় কেন্দ্রে

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ও অবিরাম বৃষ্টিতে হাওরের পানি উপচে সৃষ্টি হয় বন্যার। এমতাবস্থায় আশ্রয় কেন্দ্রে আসা লোকজন ত্রাণ, বিশুদ্ধ পানি এবং স্যানিটেশনের অপেক্ষায় আছেন।

পানি পুরোপুরি ভাবে না নামায় যেতে পারছেন না নিজের বাড়ি ঘরে। বাধ্য হয়েই থাকতে হচ্ছে আশ্রয় কেন্দ্রে।
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। সেখানে মোট ১৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তার মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছে দুইটি।

শুক্রবার (২০ মে) বিকাল ৫টার দিকে দুটি আশ্রয় কেন্দ্র সদর উপজেলার হাসননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ত্রাণ পৌছেনি। অন্যান্য সুবিধাদিও নেই। মানুষজন থাকছেন গাদাগাদি করে।

হাসন নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে সেখানে আশ্রয় নেওয়া গৃহবধূ জাহেরুন বেগম অভিযোগ করেন, ‘ছোট তিন সন্তান নিয়ে বুধবার এখানে এসেছি। আজ পর্যন্ত কেউ খোঁজখবর নেয়নি। চাল নাই। কাইল থাকি না খাইয়া আছি। ’

মো. ফয়সল মিয়া (৫০) বলেন, ‘আমরা না খেয়ে আছি। কিন্তু কেউ আমাদের দিকে তাকাচ্ছে না। স্ত্রীসহ ছয় সদস্যকে নিয়ে কষ্টে আছি। শুধু আমি না এখানে ত্রিশটি পরিবার আছে কেউ ত্রান বা কোন কিছুই পায়নি। ’

সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে গিয়ে দেখা যায়, এখানে ৩৫টি পরিবার খুবই গাদাগাদি করে আছেন। তবে যারা নতুন আসছেন তারা কেউই জায়গা পাননি। কষ্ট করে আছেন।

সুলতানপুর থেকে এসেছেন শিল্পি বেগম তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের চারজন প্রথমে ঘরের মেঝেতে পানি থাকায় খাটে উঠে ছিলাম। পানি বাড়ছে দেখে উপায় না পেয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গতকাল সকালে এখানে চলে আসি। কিন্তু থাকার জায়গা এখনো পায়নি। অন্যরুমগুলোর তালা খুলে দেওয়ার কথা বললেও কেউ শুনছে না। ’

যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আছে তারা বিশুদ্ধ পানি এবং বাথরুমের সুবিধা পাচ্ছে না কেন এমন প্রশ্ন করলে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইমরান শাহরিয়ার বলেন, আমি বিষয়টা খোঁজ নিয়ে দেখছি।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আগামীকাল সুনামগঞ্জ পৌরসভার মাধ্যমে হাছান নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে বন্যায় আশ্রয় নেওয়াদের ত্রাণ দেওয়া হবে।

যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আছে তারা বিশুদ্ধ পানি এবং বাথরুমের সুবিধা পাচ্ছে না কেন এমন প্রশ্ন করলে জেলা প্রশাসক ব্যস্ত বলে ফোন কেটে দেন।