সৈকত পাড়ে উন্মুক্ত পাঠাগার

বই এমন একটি উপকরণ, যা একজন মানুষকে সহজেই আলোকিত করে তুলতে পারে। নৈতিকতা শিক্ষা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, কৃষ্টি-সভ্যতা, সাহিত্য-সংস্কৃতি সবকিছুই রয়েছে বইয়ের ভেতরেই।

একমাত্র বইয়ের মধ্যেই আছে সব ধরনের জ্ঞান। তাই জীবনের জন্য প্রয়োজন বই। অবসরে মানুষকে বিনোদিত করতে কত কিছুই আবিষ্কৃত হয়েছে, কিন্তু বই পড়ার মতো নির্মল আনন্দের সমতুল্য হতে পারেনি কিছুই। তাই তো পাঠকের আগ্রহে যুগে যুগে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে পাঠাগার। যুগের বিবর্তনে ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারেরও প্রচলন বেড়েছে।
তবে এবারের উদ্যোগটি ভিন্ন। চোখের সামনের বিশাল সমুদ্র, সঙ্গে সঙ্গী বই। সমুদ্রের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে বই পড়ার দৃশ্য যে কোনো সাহিত্য প্রিয় মানুষকে বিমোহিত করবেই। এমন দৃশ্যের দেখা মিলবে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সমুদ্র সৈকতে।

উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদম রসুল সমুদ্র সৈকত পয়েন্টে গত ৪ মে উদ্বোধন করা হয় ‘বইবন্ধু বীচ পাঠাগার’ নামে এ উদ্যোগের। যাত্রা শুরুর পর থেকে বেশ সাড়া মিলছে বলে জানিয়েছেন এ কাজের উদ্যোক্তারা।

‘বইবন্ধু বীচ পাঠাগার’এর প্রধান সমন্বয়ক মহিউদ্দিন তোহা বলেন, মাত্র দুদিন হয়েছে শুরু করেছি। এরই মধ্যে বেশ সাড়া মিলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সকলে বিষয়টি নিয়ে উৎসাহিত করছে। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে সীমিত পরিসরে শুরু করেছি উদ্যোগ। ভবিষ্যতে এর আওতা বাড়ানো পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, বই পড়া না হোক, বীচ পাঠাগারে এসে পাঠকরা যে বই নিয়ে নাড়াচাড়া করছে এটিও বেশ তৃপ্তির। যেহেতু বিভিন্ন উৎসব কেন্দ্রীক এ বীচে মানুষ আসে তাই ইচ্ছে থাকলেও স্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা করতে পারছি না। তারপরও আমরা চিন্তাভাবনা করছি যাতে এই উদ্যোগের কিভাবে স্থায়ী রূপ দেওয়া যায়।

বিভিন্ন লেখকের প্রায় ২০০ বই নিয়ে এ পাঠাগারের যাত্রা। যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বইবন্ধু সংগঠনের উদ্যোক্তাদের। এ কাজের প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে সাহায্য সহযোগীতা করছেন স্থানীয় ইউনিয়নের বিশিষ্টজন এনামুল হক চৌধুরী এবং লেখক সিরাজুল ইসলাম এফসিএ।

বইবন্ধু চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক তানভীর রিসাত বলেন, ঘুরতে এসে তো সময়গুলো এমনি চলে যাবে। অনেকে হাতে করে বই নিয়ে আসেন সমুদ্র পাড়ে বসে পড়বেন বলে। আমাদেরও এমন একটি চিন্তা ছিল। সমুদ্রকে সামনের রেখে বই পড়ার যে অনুভূতি তা আমরা পাঠকদের দিতে চাই। এর জন্য এ ব্যবস্থা। আমাদের পাঠাগার থেকে বই নিতে কোনো ফি দিতে হবে না। তবে কোনো বই আমরা বাড়িতে নিয়ে যেতে দিচ্ছি না। সকলের সহযোগীতা এবং দর্শনার্থীদের মধ্যে পড়ার আগ্রহ বাড়লে আমাদের এ উদ্যোগ সার্থক হবে।