সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত কনটেইনার বোঝাই জাহাজ উদ্ধার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন

বন্দরের বহির্নোঙরে আরেকটি জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত ২০ ফুট লম্বা ১১৫৬টি রফতানির কনটেইনার বোঝাই এমভি হাইয়ান সিটি জাহাজকে উদ্ধার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো বন্দর।

বন্দর  সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, বন্দরের বহির্নোঙরে আরেকটি জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত ২০ ফুট লম্বা ১১৫৬টি রফতানির কনটেইনার বোঝাই এমভি হাইয়ান সিটি জাহাজকে নিরাপদে বুধবার (৪ মে) কর্ণফুলী ড্রাইডক জেটিতে আনা হয়েছে।

বন্দরের টাগ কাণ্ডারী ১,৬,১০,১১, লুসাই, জরিপ-১১, বর্ষণ, প্রান্তিক সরোয়ার, মুরিং বোট সন্দ্বীপের সহযোগিতায় জাহাজটি নিরাপদে বার্থিং করানো হয়।

গত ১৪ এপ্রিল বন্দর ত্যাগ করার সময় কুতুবদিয়ার কাছে এমটি ওরিয়ন এক্সপ্রেস জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল। এ সময় হাইয়ান সিটির পোর্ট সাইডে কার্গো হোল্ডে ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকে জাহাজটি ৭ ডিগ্রি কাত হয়ে যায়। পানি ঢোকায় ড্রাফট বেড়ে ১০ দশমিক ৭ মিটারে দাঁড়ায়। উপক্রম হয় ডুবে যাওয়ার। বিশেষ উদ্যোগে জাহাজটি কুতুবদিয়া এলাকায় নোঙর করা হয়।

হাইয়ান সিটিতে রফতানি কনটেইনারগুলোর মূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। জাহাজটির মেরামতের জন্য কনটেইনার খালাস করা আবশ্যক। তাই ঈদের ছুটি, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাহাজ মালিকের প্রতিনিধি, স্থানীয় এজেন্ট, স্যালভেজ সংস্থা, পি অ্যান্ড আই, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান দ্রুত সমন্বয় সভা করে জাহাজটি বার্থিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

এরপর কর্ণফুলী ড্রাইডক জেটিতে কনটেইনার খালাসের কাস্টম পারমিট নেওয়া হয়। জেটির ফোরশোরে ১০ দশমিক ৭ মিটার ড্রাফটের উপযোগী ড্রেজিং সম্পন্ন করানো হয়। এরপর বন্দরের নৌবিভাগের দক্ষ পাইলটিং, টাগ, স্থানীয় নৌ প্রযুক্তি, আন্তর্জাতিক মানের স্যালভেজ কোম্পানি প্রান্তিক বেঙ্গল সার্ভিসের সহযোগিতায় জাহাজটি কর্ণফুলী ড্রাইডক জেটিতে বার্থিং করানো হয়।

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলেছেন, জাহাজটি উদ্ধার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের সাহসী ও সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে ৮০০ কোটি টাকার রফতানি পণ্য যেমন রক্ষা পেয়েছে তেমনি জাহাজটি ডুবে গেলে বড় আর্থিক লোকসান ছাড়াও মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হতো। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন তৈরি পোশাক রফতানিকারকরা।

বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহানের নেতৃত্বে উদ্ধার কাজে তত্ত্বাবধান করেন বন্দরের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর মো. মোস্তাফিজুর রহমান। উদ্ধার কাজ তদারকি করেন ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম, হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম, সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন আবু সাঈদ মো. কামরুল আলম।