কাপ্তাইয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটক বরণে প্রস্তুত

মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই। ঈদের ছুটি কাটাতে আসা পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত অপরূপ সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি কাপ্তাই। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় চিরচেনা রূপে ফিরতে শুরু করেছে উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলো। অপরদিকে পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্যজেলা রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা। কাপ্তাইয়ের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম মনষ্যসৃষ্ট কাপ্তাই হ্রদ, আছে উঁচু-নিচু পাহাড়, পাহাড়ের পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা শীতল জলের কর্ণফুলী নদী, নদী ধারে গড়েছে বহু পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে পর্যটকের ঢল নামলেও গত ২ বছর করোনার কারনে পর্যটক শূন্য ছিল কাপ্তাইয়ের বিনোদন কেন্দ্র গুলো। কিন্ত এবার করোনামুক্ত ঈদ উদযাপন করবে মুসলিম ধর্মের লোকজন। এছাড়া এবার ঈদে প্রায় এক সপ্তাহ টানা ছুটি থাকবে। ফলে কাপ্তাইয়ের পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন এবছর কাপ্তাইয়ে রেকর্ড পরিমান পর্যটকের আগমন ঘটতে পারে। কাপ্তাই উপজেলায় বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম কাপ্তাই শীলছড়ি প্রশান্তি পার্ক, ওয়াগ্গা প্যানোরোমা জুম রেস্তোরা, শীলছড়ি বনশ্রী পর্যটন কেন্দ্র, লেক প্যারাডাইস, লেকশোর পিকনিক স্পট, লেকভিউ পিকনিক স্পট, শিলছড়ি নিঃসর্গ রিভার ভ্যালি, পাহাড়িকা পিকনিক স্পট, কাপ্তাই রিভার ভিউ পার্ক প্রভৃতি। কাপ্তাই শীলছড়ি বনশ্রী পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রুবায়েত আক্তার আহমেদ জানান, করোনা ভাইরাসের ফলে কাপ্তাইয়ে বিগত ২ বছর পর্যটন ব্যবসায় মন্দা চলছিল। এবছর আমরা আশা করছি হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটবে। এদিকে, কাপ্তাই বালুচরে অবস্থিত প্রশান্তি পিকনিক স্পটের পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী জানান, কাপ্তাইয়ের অপূর্ব সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পর্যটন মৌসুম ছাড়াও সারাবছর পর্যটকদের আনাগোনা থাকত। বিশেষ করে ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢ়ল নামে বেশী। ঈদকে সামনে রেখে আমরা নতুন রুপে সাজিয়েছি প্রশান্তি পার্ক। এবার পর্যটকরা ঈদে এসে প্রশান্তিতে ভিন্নতর স্বাদ পাবে। কর্ণফুলী নদীতে কায়াকিং করতে পারবে পর্যটকরা। কাপ্তাই শীলছড়িতে চলতি সপ্তাহে নতুন ভাবে যাত্রা শুরু করেছে “নির্সগ রিভার ভ্যালী” নামের একটি পর্যটন স্পট। এর উপদেষ্টা মোঃ নাছির উদ্দীন জানান, পর্যটকদের একটু ভিন্নতা দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কয়েকজন মিলে এই পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে তুলেছি। এই পর্যটন স্পটে বসে কর্ণফুলী নদীর দৃশ্য অবলোকন করার পাশাপাশি এখানে দেশীয় বিভিন্ন খাবারের স্বাদ গ্রহন করতে পারবে পর্যটকরা। এদিকে, শনিবার দুপুরে কাপ্তাইয়ের প্যানোরোমা জুম রেস্তোরাঁয় গিয়ে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে আরো নান্দনিক ভাবে সাজানো হচ্ছে এই পিকনিক স্পটকে। কর্ণফুলী নদীর তীরে স্থাপন করা হয়েছে “আই লাভ ওয়াগ্গা” পয়েন্ট। যেখানে বসে ছবি তোলাসহ কর্ণফুলী নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। এছাড়া সেলফি বোট, নতুন ভাবে শিশু পার্ককে শিশুদের বিনোদন উপযোগী খেলাধুলার আইটেম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, কাপ্তাই লেকভিউ পিকনিক স্পট, রিভার ভিউ, লেক প্যারাডাইস লেকশোর পিকনিক স্পটে গিয়ে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে নতুন রুপে আরো আর্কষনীয় করে তোলা হচ্ছে এসব বিনোদন কেন্দ্র গুলোকে। কাপ্তাই ফোরামের এডমিন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ আর লিমন জানান, নয়নাভিরাম কাপ্তাই লেক, কর্নফুলী নদী, পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কেপিএম লিঃ, রাম পাহাড়-সীতাপাহাড়, ওয়াগ্গা চা বাগান, চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার সহ কাপ্তাইয়ের প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য্য। তাই তো সারা বছর পর্যটকের আনাগোনায় মুখরিত থাকে কাপ্তাই। আমরা আশা করছি এবার ঈদে রেকর্ড পরিমান পর্যটক আসবে রুপসী কাপ্তাইয়ে। কাপ্তাই থানার ওসি জসিম উদ্দিন জানান, কাপ্তাই থানা পুলিশ প্রতিদিন টহলে থাকে। ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের আগমন উপলক্ষে টহল আরো জোরদার করা হবে। এছাড়া আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি দেখা দিলে তাৎক্ষনিক পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।