বেনজেমার হ্যাটট্রিকে সেমিতে এক পা রিয়ালের

চেলসির কাছে হেরে সেমিফাইনালে থেমেছিল রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়নস লীগ মিশন। বছর ঘুরে কোয়ার্টার ফাইনালেই প্রতিশোধ নেয়ার মঞ্চ পেলো লস ব্লাঙ্কোরা। সেই সুযোগের প্রথম ধাপের যুতসই ব্যবহার করলেন করিম বেনজেমা। ফরাসি স্ট্রাইকারের হ্যাটট্রিকে প্রথম লেগে ৩-১ গোলের বড় জয় পেলো রিয়াল।
বুধবার রাতে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে করিম বেনজেমা জোড়া গোলে লিড নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। বিরতিতে যাওয়ার আগে দলকে লড়াইয়ে ফেরান চেলসির জার্মান তারকা কাই হ্যাভার্টজ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বেনজেমা।

ম্যাচশেষে বেনজেমার ভূয়সী প্রশংসা করেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তিনি বলেন, ‘সে ভালো থেকে আরো ভালো হয়ে উঠছে। সে এমন একজন, ক্রমে যে নেতৃত্ব ও কতৃত্ব দেখাচ্ছে এবং দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।’
আনচেলত্তি বলেন, ‘শুধু স্ট্রাইকার নয়, খেলোয়াড় হিসেবে সে সত্যিই পরিপূর্ণ একজন।
সে অনেক গোল করে এবং তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি বল পজেশনে রাখার ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য। আমরা সত্যিই খুশি এবং তার মতো একজন খেলোয়াড় পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।’

এদিকে ম্যাচ হারলেও ঘরের মাঠে স্পষ্ট দাপট ছিল চেলসির। ৫৮ শতাংশ বল দখলে রেখে ২০টি শটের ৫টি লক্ষ্যে রাখে স্বাগতিকরা। ৪২ শতাংশ বল দখলে রাখা রিয়াল মাদ্রিদ ৮টি শটের ৫টি লক্ষ্যে রাখে।
প্রিমিয়ার লীগে আগের ম্যাচে ব্রেন্টফোর্ডের কাছে পরাস্ত হয়েছিল চেলসি। ঘরের মাঠে দলের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তিতে নিশ্চিতভাবে শঙ্কিত কোচ টমাস টুখেল। ম্যাচশেষে তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের খুঁজে পেতে হবে। আন্তর্জাতিক বিরতির পর আমরা ছন্দে নেই। আজ রাতে রিয়ালের ম্যাচ ব্রেন্টফোর্ডের পুনরাবৃত্তি চিল। পাঁচ দিনে ৭ গোল হজম করেছি আমরা। আমি মনে করিনা এর কোনো গভীর কারণ রয়েছে। এটা উদ্বেগজনক।’
টুখেল বলেন, ‘আপনি এ ধরনের পারফরম্যান্স থেকে সুফল আশা করতে পারেন না। আমরা আমাদের মান থেকে অনেক দূরে ছিলাম।’

দশম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় রিয়াল মাদ্রিদ। ডি-বক্সে থিয়াগো সিলভাকে ফাঁকি দিয়ে জোরালো শট নেন ভিনিসিউস জুনিয়র। তবে ক্রসবারে বাধা পায় বল।
ছয় মিনিট পর থিবো কোর্তোয়ার নৈপুণ্যে বেঁচে যায় রিয়াল। বাঁ দিক থেকে রিস জেমসের ফ্রি-কিকে বল সামনের রক্ষণ দেয়ালকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যেই ছিল। ঝাঁপিয়ে কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন সাবেক চেলসি গোলরক্ষক।
২১তম মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকেই ক্রস বাড়ান ভিনিসিউস এবং হেডে দলকে লিড এনে দেন বেনজেমা।

৩ মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয় গোল হজম করে চেলসি। ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ক্রস বাড়ান লুকা মদরিচ, হেডে দারুণভাবে লক্ষ্যভেদ করেন বেনজেমা।
৪০তম মিনিটে ম্যাচে ফেরে চেলসি। ডান দিক থেকে জর্জিনহোর ক্রসে বল বক্সে পেয়ে জোরালো হেডে ব্যবধান কমান হ্যাভার্টজ।

বিরতির পর গোলরক্ষক মেন্ডির ভুলে তৃতীয় গোল হজম করে চেলসি। বল ক্লিয়ার করতে নিজেদের ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নেন কাসেমিরো। অপরপ্রান্তে নিজের সীমানা থেকে প্রায় ৩০ গজ এগিয়ে গিয়ে বুক দিয়ে বল নামান গোলরক্ষক মেন্ডি। বেনজেমাকে ছুটে আসতে দেখে বাঁ পাশে রুডিগারকে পাস দেন তিনি। তার দুর্বল পাস ধরেই শট নিতে পারতেন জার্মান ডিফেন্ডার; কিন্তু পারেননি তিনি। উপহার পেয়ে শট নেন বেনজেমা। বিনা বাধায় বল চলে যায় জালে।

লা লিগার গোলদাতার তালিকায় ২৪ গোল নিয়ে পরিষ্কার ব্যবধানে শীর্ষে থাকা বেনজেমার এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লীগে গোল হলো ১১টি। মৌসুমে তার মোট গোল হলো ৩৭টি।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আগামী মঙ্গলবার হবে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের লড়াই।