বিচার নেই, মামলা করে কী হবে : প্রীতির বাবা

রাজধানীর শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাতে দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান জামাল প্রীতি (২২) । এ ঘটনায় তার শান্তিবাগের বাসায় চলছে এখন শোকের মাতম।

শুক্রবার (২৫ মার্চ) দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে প্রিয় সন্তানের মরদেহের অপেক্ষায় থাকা সামিয়ার বাবা মো. জামাল উদ্দিন বলেছেন, গরিবেরতো বিচার নেই। আমরা গরিব মানুষ, মামলা করে কী হবে? কার কাছে বিচার চাইব? এর বিচার আল্লাহর কাছে দিয়ে রাখলাম।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুর ওপর গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে রিকশায় থাকা আমার মেয়ে প্রীতি মারা গেছে।

তিনি আরও বলেন, প্রীতি বৃহস্পতিবার সারাদিন ওর বান্ধবী সুমাইয়ার বাসায় ছিল। রাতে বান্ধবী সুমাইয়াসহ আমাদের শান্তিবাগের বাসায় ফেরার সময়, ওর মা বলে তোমার মামা-মামী আসছে। তুমি আজ সুমাইয়াদের ওখানেই থাকো। পরে ওরা শাজাহানপুর থেকে আবার সুমাইয়াদের বাসায় ফিরে যাওয়ার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

জামাল উদ্দিন বলেন, তাছাড়া ওরা দুইজন খুব ভালো বন্ধু ছিল, সুমাইয়া মাঝে মধ্যে আমাদের বাসায় এসে থাকতো।

তিনি বলেন, ১ এপ্রিল প্রীতির একটা চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল।

রাজধানীর ২১৮ নম্বর পশ্চিম শান্তিবাগের বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন প্রীতি। তার মা হোসনে আরা বেগম গৃহিনী। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে।

প্রীতির বাবা বলেন, আমার এক ছেলে সোহাইব জামাল সামী এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। আর প্রীতি বদরুন্নেসা কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে পড়ত। মেয়েটা লেখাপড়ায় খুব ভালো ছিল। কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় ও লেখাপড়া বন্ধ করে দেয়।

এ ঘটনায় কোনো মামলা করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোন মামলা-মোকদ্দমায় যাব না, যদি কেউ সাহায্য সহযোগিতা করে, তাহলে করতে পারি। আমার পারিবারিক অবস্থা বেশি ভালো না। আর মামলা-মোকদ্দমা করে কী করব? এর বিচার আল্লাহর কাছে দিয়ে রাখলাম। ’

এর আগে প্রীতির মরদেহের সুরতহাল করেন শাহজাহানপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তমা বিশ্বাস। সুরতহাল রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন, প্রীতির বুকের বাম পাশে একটি ছিদ্র ও পিঠের ডান পাশে মাঝ বরাবর একটি গোল চিহ্ন রয়েছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাতে মৃত ব্যক্তি তার বর্তমান বাসা থেকে রিকশাযোগে বান্ধবীর সঙ্গে তার বাসায় যাচ্ছিল। রাত আনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে উত্তর শাহজাহানপুর মানামা নামক বহুতল ভবনের সামনে এলে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতকারীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি মারা যান।