জুয়েলারি ব্যবসায়ীর কাটা মরদেহ উদ্ধার

ফটিকছড়ির এক জুয়েলারি ব্যবসায়ীর ট্রেনে কাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে সীতাকুণ্ড রেল পুলিশ। নিহত উত্তম কুমার ধর (৪৬) ফটিকছড়ির লেলাং ইউনিয়নের শাহনগর বণিক পাড়ার মৃত শ্রী ধাম ধরের পুত্র।

বিষয়টি পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করেছে তার পরিবারের সদস্যরা।

জানা গেছে, নাজিরহাট বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও জনতা জুয়েলার্সের মালিক উত্তম কুমার ধর গত ৮ মার্চ মঙ্গলবার দোকান থেকে চট্টগ্রাম শহরের উদ্দেশে বের হন। পরে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন বুধবার ফটিকছড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ভাই উজ্জল কুমার ধর।

এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার রেললাইনের উপর থেকে উত্তম কুমার ধরের ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করে সীতাকুণ্ডের মাধবকুণ্ড রেল পুলিশ।

আজ শুক্রবার (১১ মার্চ) ছিন্নভিন্ন মরদেহটির হাতের রিং ও পায়ের জুতা দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে উত্তম কুমার ধরকে শনাক্ত করেন তার ভাই উজ্জ্বল কুমার ধর।

নিহত উত্তম কুমার ধরের ভাই উজ্জল কুমার ধর সাংবাদিকদের বলেন, “আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেছি। আমার ভাই সীতাকুণ্ড যাওয়ার কথা ছিল না। কেউ অপহরণ করে ওখানে নিয়ে গেছে। পরে পরিকল্পিতভাবে ট্রেনের নিচে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে।”

তিনি বলেন, “ফটিকছড়ির নাজিরহাট বাজারের জনতা জুয়েলার্সের মালিক আমার ভাই। মঙ্গলবার সকালে দোকান থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। শহরে একজন উকিলের সাথে দেখা করার কথা ছিল তার। এছাড়া একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করে চিকিৎসা নেওয়ার কথাও ছিল কিন্তু রাতে আর ফিরেনি। আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়েছি কিন্তু কোথাও না পেয়ে ফটিকছড়ি থানায় নিখোঁজ সাধারণ ডায়েরি করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পেরে পুলিশ আমাদের জানিয়েছিল বুধবার সীতাকুণ্ডের মাধবকুণ্ডে মোবাইলের সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আমরা সেখানে খোঁজ নিতে যাই। বিভিন্ন মন্দির আত্মীয়-স্বজন বাদ রাখিনি। বৃহস্পতিবার রাতে জানতে পারলাম, একটি ট্রেন দুর্ঘটনায় একজন মারা গেছে। তার খোঁজ নিয়ে দেখি মরদেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। হাতের আংটি ও পায়ে জুতা দেখে শনাক্ত করি তিনি আমার ভাই।”

সীতাকুণ্ডে রেলওয়ে জিআরপি পুলিশের এসআই খোরশেদুল আলম বলেন, “সীতাকুণ্ডের সদর ডেবার পাড় এলাকায় রেললাইনে কাটা পড়া এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছি আমরা বৃহস্পতিবার রাতে। রাত ৮টার দিকে ট্রেনে কাটা পড়েছিল লোকটি। মরদেহটি রাতেই মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। শুরুতে অজ্ঞাত হিসেবে থাকলেও মরদেহটি ফটিকছড়ির এক জুয়েলারি ব্যবসায়ির বলে শনাক্ত করায় পরিবারকে হস্তান্তর করেছি।”

এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হোসেন বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা নিখোঁজ ডায়েরি নিয়েছি। প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারি ওই জুয়েলারি ব্যবসায়ী সীতাকুণ্ডে আছেন। তবে এখন মরদেহ পাওয়া যায়। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার পরিবারের সদস্যরা মামলা করলে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”