চেয়ারম্যান বাবুল মিয়ার হত্যার চেষ্টা: জড়িতদের গ্রেফতার নেই

শফিউল আলম, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ রাউজানে আবারো সন্ত্রাসীরা সক্রিয় উঠেছে অতিতে রাউজানে হত্যাকান্ডের কোন বিচার না হওয়ায় সন্ত্রাসীরা ছদ্দবেশ ধারন করে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়ায় গত ৩১ জানুয়ারী রাতেই সন্ত্রাসীরা নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়াকে হত্যার প্রচেষ্টা চালায় । নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়াকে হত্যার প্রচেষ্টার ঘটনায় চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বাদী হয়ে রাউজান থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে মামলা করেন । হত্যার প্রচেষ্টার ঘটনার পর ১১দিন অতিবাহিত হলে ও হত্যাকান্ডোর প্রচেষ্টার সাথে জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি । চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নে গুহ পাড়ার বাসিন্দ্বা মৃত আবদুল সালামের পুত্র শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হক ও তার সহযোগীরা রাউজান নোয়াপাড়া পুলিশ ফাড়ি লুট করে পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র লুট ও পুলিশ ফাড়িতে দায়িত্ব পালনকারী আনসার সদস্য আবদুর রশিদকে গুলি করে হত্যা করে। নোয়াপাড়ার আবদুল হামিদ কাদাইয়্যাকে চট্টগ্রাম নগরীতে নির্মম ভাবে হত্যা করে। শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা চট্টগ্রাম নগরীতে ছাত্রদল নেতা নিটোলকে নগরীর গুডস হিলের সামনে গুলি করে হত্যা করে। গত ২০০১ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সময়ে রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হক, শীষ সন্ত্রাসী রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের বদুমুন্সি পাড়া এলাকার বাসিন্দ্বা রমজান আলী, শীর্ষ সন্ত্রাসী রাউজানের নোয়াপাড়ার সামমাহলদার পাড়ার বাসিন্দ্বা আবু তাহের, সন্ত্রাসী কামরুল হাসান টিটু, শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হকের ভাগিনা রাউজানের পুর্ব গুজরা ইউনিয়নের বড়ঠাকুর পাড়ার বাসিন্দ্বা সন্ত্রাসী জাহেদ, সন্ত্রাসী চইক্যা, শীষ সন্ত্রাসী রাউজানের পুর্ব গুজরা ইউনিয়নের আধার মানিক এলাকার বাসিন্দ্বা বিধান বড়ুয়া, রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের বদুমুন্সি পাড়া এলাকার বাসিন্দ্বা ফরিদ, মগদাইর সন্ত্রাসী পারভেজ, কাগতিয়ার বজল, জুম্মইয়্যা, রাউজানের চিকদাইর ইউনিরয়নের দক্ষিন সর্তা এলাকার বাসিন্দ্বা শীষ সন্ত্রাসী মোহাম্মদ রফিক বাচাঁইয়্যা, তার সহযোগি এখতেয়ার উদ্দিন সুনইক্যা, দেলোযার হোসেন, রাউজানের ৭নং রাউজান ইউনিয়নের হরিশখান পাড়ার বাসিন্দ্বা র‌্যাবের ক্রস ফায়ারে নিহত শীর্ষ সন্ত্রাসী জানে আলম, তার সহযোগি ডাকাত পুর্ব রাউজানের বাসিন্দ্বা শাহ আলম সাহাইয়্যা, ডাবুয়া ইউনিয়নের হিংগলা এলাকার মৃত আবদুল মোনাফের পুত্র শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক, তার সহযোগি দক্ষিন হিংগলার নেজাম, কলমপতির আলী আজম অশ্রু, কদলপুরের সন্ত্রাসী হারুন, ধামা ইলিয়াছ, শীর্ষ সন্ত্রাসী বাগোয়ানের গশ্চি এলাকার বাসিন্দ্বা আবু জাফর, সহ সন্ত্রাসীরা রাউজানে হত্যা অপহরন, চাদাঁবাজি, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা সংগঠিত করে রাউজানের সাধারন মানুষকে জিম্মি করে রেখে । ঐ সময়ে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয় রাউজানের কদলপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বি,বি এ মার্কেটিং বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন খানের শ্যালক পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের পুত্র ফারুক, মোহাম্মদপুরের নেজাম, হরিশখান পাড়ার শাহা আলম,রাউজান ইউনিয়নের মেম্বার আকতার হোসেন, রাউজান পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের পশ্চিম রাউজান এলাকার বাসিন্দ্বা মোটর সাইকেল মেকানিক বোবা নাসির, কদলপুরের সনজিব বড়ুয়া, রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের বদুমুন্সি পাড়ার আবুল কাসেম, রাউজানের হিংগলা ওয়ারা পুঞঞা বৌদ্ব অনাথ আশ্রমের পরিচালক জ্ঞানজ্যেতি ভিক্ষু, রাউজানের বিনাজুৃরীর বাসিন্দ্বা ছাত্রলীগ নেতা আশিষ বড়ুয়া, পুর্ব গুজরা ইউনিয়নের মেম্বার প্রদীপ সেন, আওয়ামী লীগ নেতা ফেরদৌস আলম মাস্টার, আবুল কাসেম, বড়ঠাকুর পাড়ার জাহাঙ্গীর ও মানিক, সাতবাড়ীয়ার যুবলীগ নেতা আবু তালেব, রাউজানের গহিরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুর হককে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যার প্রচেষ্টা চালায় প্রকাশ্য দিবালোকে রাউজানের পশ্চিম গহিরা ব্রীক ফিল্ড এলাকায় । ঐ সময়ে গহিরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হক প্রানে বাচঁলে ও গুলিতে ঝাঝড়া করে দেওয়ায় তার দু পা কেটে ফেলতে হয় । পরবর্তী পঙ্গুত্ব অবস্থায় সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মৃত্যুবরন করেন। গত ২০০৩ সালে রাউজান সুরেশ বিদ্যায়তন পরিচালনা কমিটির সভা চলাকালে র‌্যাবের ক্রস ফায়ারে নিহত শীর্ষ সন্ত্রাসী জানে আলম ও তার সহযোগিরা তৎকালীন রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বর্তমানে রাউজান পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজকে হত্যার উদ্যোশে সভায় হামলা করে। হামলার ঘটনার সময়ে রাউজান পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ আহতবস্থায় দৌড়ে বিদ্যালয়ের একটি শৌচাগারে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পায় । সন্ত্রাসীরা রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের সরকার পাড়ায় রত্না মহাজনের ঘরবাড়ী আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। রাউজানের কেউটিয়ায় ছাত্রলীগ নেতা পুলক ভট্টচায্যের ঘরবাড়ী, কলমপতি অরুন দে” এর ঘরবাড়ী, গহিরা চৌমুহনী গোল্ডেন ফার্নিসারের দোকান, নোয়জিশপুর ফতেহ নগর বাজারে মরহুম দানু মিয়া সওদাগরের মুদিও দোকান আগুন লাগিয়ে জ¦ালিয়ে দেয় । গত ২০১৫ সালে রাউজানের নোয়াপাড়ার চৌধুরী হাটে যুবলীগ নেতা মোবারককে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা । গত ২০০৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাউজানের কলমপতি এলাকায় র‌্যাবের ক্রস ফায়ারে শীষ সন্ত্রাসী জানে আলম ও তার ৯ সহযোগি নিহত হয় । পরবর্তী শীষ সন্ত্রাসী ফজল হক গোপনে ফাড়ি জমায় সৌদি আরবে, শীষ সন্ত্রাসী আাজিজুল হক ওমানে, অন্যান্য সন্ত্রাসীদের মধ্যে শীষর্ সন্ত্রাসী বিধান বড়ুয়া, রফিকুল ইসলাম বাচাইয়্যা, কামরুল হাসান টিটু ডাকাত আলম গ্রেফতার হলে ও জেল থেকে জমিনে বের হয়ে আর্ত্নগোপনে রয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী বিধান বড়ুয়্ াও রফিকুল ইসলাম বাচাইয়্যা । অন্য সন্ত্রাসীরা আর্ত্নগোপনে দেশের মধ্যে রয়েছে । আর্ত্নগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে । এসব সন্ত্রাসীরা রাউজানে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে । দক্ষিন রাউজানের নোয়াপাড়া ইউয়িনের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়াকে হত্যার প্রচেষ্টা, রাউজানের নোয়াপাড়া পথের হাট থেকে মোটর সাইকেল চুরি, সহ বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়াচ্ছে । রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বলেন, আত্ণগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের কয়েকজন দুবাই বসে দুবাইতে অবস্থানকারী এক রাজনৈতিক নেতার নির্দেশে শান্তির জনপদ হিসাবে গড়ে তোলা রাউজান উপজেলাকে আবারো সন্ত্রাসের জনপদ হিসাবে পরিনত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । তারই ধারবাহিকতায় আমাকে হত্যার প্রচেষ্টা চালিয়েছে । এ ব্যাপারে রাউজান থানার ওসি আবদুল্ল্যাহ আল হারুনকে ফোন করে জানতে চাইলে, রাউজান থানার ওসি আবদুল্ল্রাহ আল হারুন বলেন, চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া হত্যার প্রচেষ্টার মামলা পুলিশ গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে। ঘটনার পর থেকে পুলিশ চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া হত্যার প্রচেষ্টার ঘটনা উদঘাটিত করতে মাঠে রয়েছে । এখনো কোন ক্লু পাওয়া য়ায়নি । রাউজান থানার ওসি আবদুল্ল্রাহ আল হারুন আারো বলেন, আর্ত্নগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্বে গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকলে ও সন্ত্রাসীরা এলাকার বাইরে অজ্ঞাত স্থানে থাকায় তাদের পুলিশ গ্রেফতার করতে পারছেনা । আর্ত্নগোপনে থাকা সন্ত্রাসী যে হউক না কেন এলাকায় আসলে গ্রেফতার করা হবে । তথ্য অনুসন্দ্বানে জানা গেছে, সন্ত্রাসীদের হাতে রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খায়েজ আহম্মদ, পুর্ব গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন রাজু, ৭নং রাউজান ইউনিয়নের মেম্বার আকতার হোসেন, পুর্ব গুজরা ইউনিয়নের মেম্বার প্রদীপ সেন, হলদিয়া ইউনিয়নের মেম্বার যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম নিহত হয় । রাউজানে আর্ত্নগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা দেশের মধ্যে ও বিদেশে অবস্থান করে তাদের সহযোগিদের দিয়ে রাউজানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর পায়তারায় মেতে উঠেছে । আর্ত্নগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের সহযোগিরা ছদ্দবেশ ধারন করে মাদক পাচার, মাদক ব্যবসা, হুন্ডি ও স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত । তথ্য অনুসন্দ্বানে আরো জানা গেছে, গত ২০০৪ সালে ঢাকায় টেন্ডারবাজীকে কেন্দ্র দুই পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষের ঘটনা সংগঠিত হয় । ঐ সময়ে বুয়েট ছাত্র সাবেকুননাহার সনি গুলি বিদ্ব হয়ে মারা যায় । বুয়েট ছাত্রী সাবেকুনহার সনি হত্যা মামলায় সন্ত্রাসী মোক্কামেল হায়াত খান মুকি সহ তার সহযোগিদের মৃত্যুদন্ড দেয় আদালত । সাবেকুনাহার সনি হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী মোক্কামেল হায়াত খান মুকিকে ঘটনার পর থেকে কোন সময়ে আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতার করতে পারেনি । সাবেকুনাহার সনি হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী মোক্কামেল হায়াত খান মুকি রাউজানেরকদলপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম ইদ্রিস মিয়ার পুত্র । রাউজানে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহতদের স্বজনেরা হত্যাকান্ডের কোন বিচার পায়নি ।