সেচ প্রকল্পের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার আগে তিনিটি ট্রান্সফরামার চুরি

শফিউল আলম, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার ৮নং কদলপুর ইউনিয়নের দরিদ্র কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের পশ্চিম কদলপুর পুর মগবিল, মোয়াইব্যা বিলে প্রতি বৎসর শুস্ক মৌসুমে খনাছড়ি খালের বশির মোহাম্মদ চৌধুরী প্রকাশ বাছুআহম্মদ চৌধুরী ঘাট এলাকায় ডিজেল চালিত সেচ পাম্প বসিয়ে বোরা ধানের সেচের মাধ্যমে পানি সরবারাহ করে নিজেই ও এলাকার কৃষকেরা বোরো ধানের চাষাবাদ করেন । দুইটি সেট পাম্পের মাধ্যমে ১শত ২০ একর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করে এলাকার কৃষকেরা। জ্বালানী তৈলের মুল্য বৃদ্বি পাওয়ায় এ বৎসর সেচ প্রকল্পের জন্য বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগের আবেদন করেন সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার দরিদ্র কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের। দরিদ্র কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদেরের আবেদনের পরিপেক্ষিতে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (২) ১৮ হাজার টাকা জামানত নিয়ে ও একটি মিটার ফি ৩শত ২০ টাকা করে ৯শত ৬০ টাকা নিয়ে সেচ প্রকল্পের জন্য ১৫ কেভি ক্ষমতা সম্পন ৩টি ট্রান্সফরামার সেচ প্রকল্পের পাশে বিদ্যুৎ লাইনের খুটিতে বসিয়ে দেয়। সেচ প্রকল্পের জন্য ট্রান্সফরমার বাসানোর পরম মগ বিল ও মেয়াইব্যা বিলের পাশের খালের গভীরতা কমে যাওয়ায় পানি না থাকায় সেচ প্রকল্পের বৈদ্যুতিক মোটর ট্রান্সফরমারের খুটি থেকে দুরে খালে যে স্থানে পানি থাকে ঐ স্থানে বসানোর জন্য ৩শত ৫০ দৈর্ঘ থ্রী – কোয়াড ডুপ্লেক্স বৈদ্যুতিক তারের প্রয়োজন হয়ে দেখা দেয় । সেচ প্রকল্পের জন্য ফ্রি বৈদ্যুতিক লাইনের তার পাওয়ার জন্য কদলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর সুপারিশকৃত আবেদন করেন দরিদ্র কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের । চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর নোয়াপপড়াস্থ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারের বরাবরে আবেদন করা হলে সেচ প্রকল্পের জন্য ফ্রি তার দেয়নি । এদিকে গত ২ ফেব্রয়ারী বুধবার দিবাগত রাতে সেচ প্রকল্পের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পুর্বে সেচ প্রকল্পের জন্য বসানো বিদ্যুৎ লাইনের খুটি থেকে তিনটি ট্রান্সফরামার চুরি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ব চোরের দল । এ ঘটনার পর কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের ট্রান্সফর্মার চুরির ঘটনার বিষয়ে রাউজান থানায় অভিযোগ করেন। সেচ প্রকল্পের জন্য বসানো কিনটি ট্রান্সর্ফমার চুরির ঘটনার পর কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর নোয়াপাড়াস্থ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারকে লিখিত ভাবে জানানো হয় । চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর নোয়াপাড়াস্থ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ট্রান্সর্ফমার চুরি হওয়ার ঘটনা অবগত হয়ে নাসির নামের এক কর্মচারীকে ঘটনাস্থলে পাঠায় বলে জানান কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের। নাসির নামের পল্লী বিদ্যুৎতের কর্মচারী ঘটনাস্থলে এসে চুরি হওয়া ট্রানসর্ফমারের খালি টোলের মধ্যে একটি কাঠ পায় । কাঠটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মালামাল ও তার ভর্তি করা আনা কাঠের বাক্সের । এই কারনে কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের ও এলাকার কৃষকের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয় । ট্রান্সর্ফমার চুরির ঘটনার সাথে পল্লী বিদ্যুৎতের কর্মচারীরা জড়িত বলে দাবী করছে এলাকার কৃষকেরা । কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের আরো বলেন, ট্রান্সর্ফমার চুরির ঘটনার পর পুনরায় তিনটি ট্রান্সর্ফমার বসাতে চুরি হওয়া ট্রান্সর্ফমারের মুল্য বাবদ পল্লী বিদ্যুৎ ২লাখ ১৬ হাজার টাকা দাবী করছে। ট্রান্সর্ফরমার চুরি হওয়ার পর দরিদ্র কৃষক একদিকে ২লাখ ১৬ টাকা ক্ষতিপুরন দেওয়ার জন্য পল্লী বিদ্যুতের চাপ অপরদিকে সেচ প্রকল্পের আওতায় কৃষি জমিতে সেচের পানি সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে । কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের বলেন, এলাকার লোকজন থেকে ধার করে টাকা নিয়ে ৮২ হাজার টাকা দিয়ে ডিজেল চালিত সেচ পাম্প বসিয়ে সেচ দিয়ে বোরো ধানের চাষাবাদ করছে । সেচ প্রকল্পের ১শত ২০ একর জমির মধ্যে ৭০ একর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করা হয়েছে । ট্রান্সর্ফমার চুরি হওয়ায় সেচ প্রকল্পের পুরো জমি বোরো ধানের চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব নয় বলে জানান কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদের। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর নোয়াপাড়াস্থ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ জোনায়েদকে ফোন করে জানতে চাইলে, চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর নোয়াপাড়াস্থ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ জেনায়েদ বলেন, কদলপুরে সেচ প্রকল্পের জন্য বসানো তিনটি ট্রান্সর্ফমার চুরির ঘটনার ব্যাপারে রাউজান থানায় অভিযোগ করা হয়েছে । পুনরায় কদলপুরে সেচ প্রকল্পের জন্য ট্রান্সর্ফমার বসাতে হলে সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার সৈয়দ আবদুল কাদেরকে চুরি হওয়া ট্রান্সর্ফরমারের ক্ষতিপুরন বাবদ ২লাখ ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে । ২লাখ ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করা হলে সেচ প্রকল্পের জন্য ট্রান্সর্ফরমার বসিয়ে দেওয়া হবে । চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর নোয়াপাড়াস্থ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ জেনায়েদ আরো বলেন কদলপুরে সেচ প্রকল্পের জন্য বসানো বিদ্যুৎ লাইনের ট্রান্সর্ফমার চুরি হওয়ার পুর্বেই রাউজানের নোয়াপাড়ায় গরবিউল্ল্যাহ পাড়া থেকে সাড়ে ৩৭ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যায় । গরিবুল্লাহ পাড়া থেকে ট্রান্সর্ফরমার চুরি হওয়ার পর ফোন করে কদলপুরের সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার কৃষক সৈয়দ আবদুল কাদেরকে সর্তক করে দেওয়া হয়। সেচ প্রকল্পের জন্য বসানো ট্রান্সর্ফরমারের স্থানে রাতেই পাহারা দেওয়ার জন্য । এ ব্যাপারে কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন, সেচ প্রকল্পের জন্য বিদ্যুৎ লাইনের ট্রান্সর্ফমার চুরির ঘটনার সাথে পল্লী বিদ্যুৎতের কর্মচারীরা জড়িত রয়েছে। বিদ্যুৎ চালিত বিদ্যুৎ লাইনের খুটিতে উঠে প্রশিক্ষিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মচারী ব্যতিত এই ট্রান্সর্ফমার চুরি করা আর কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় । ট্রান্সর্ফরমার চুরির ঘটনার সাথে জড়িতেদের খুজেঁ বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন কদলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী ।