২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পানির দাম বাড়াতে চায় ওয়াসা

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেছেন, সরকার বলছে- ভর্তুকিটাকে কমিয়ে আনতে হবে। সরকার ভর্তুকি দেবে দরিদ্র মানুষের জন্য। ৫ শতাংশ দাম বাড়ানো যথেষ্ট না। কারণ বাংলাদেশ এখন মধ্যমআয়ের দেশ। পানির দাম নিয়ে আমরা সরকারকে প্রস্তাব করেছি, চার ভাগে। একটা হচ্ছে ১০০ ভাগ, একটা হচ্ছে ৫০ ভাগ, একটা হচ্ছে ৪০ ভাগ এবং আরেকটা হচ্ছে ২০ ভাগ দাম বাড়ানোর। তবে আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে ২০ শতাংশের কম যেন না হয়।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর ওয়াসা ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলোচনায় এ কথা জানান ঢাকা ওয়াসার শীর্ষ এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, পানির মূল্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

পানির উৎপাদন খরচ বেশি। কিন্তু বিনিময় মূল্য কম। সরকার ভর্তুকি দিয়ে চালাচ্ছে। ভর্তুকি হ্রাস করার জন্য কি করা যায় সেটা নিয়ে আমরা প্রতি বছর আলোচনা করি। তারই অংশ হিসেবে বোর্ড সভায় আলোচনা হয়েছে। প্রত্যেক বছর পানির মূল্যে সমন্বয় করে থাকি। ৫ শতাংশ সমন্বয় করতে পারে বোর্ড। এর বেশি করতে পারে সরকার। প্রতি বছর আমরা ৫ শতাংশ করে দাম সমন্ব^য় করেছি, করব। তিনি জানান, সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে উৎপাদিত প্রতি এক হাজার লিটার পানির জন্য সংস্থাটির খরচ ২৫ টাকা, পদ্মা যশলদিয়ায় ২৭ টাকা এবং গন্ধবপুর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে সম্ভব্য খরচ হবে ৩৫ টাকা। ওয়াসার প্রস্তাব অনুযায়ী ২০ শতাংশ দাম বাড়ালেও আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি হাজার লিটার পানির জন্য দাম গুনতে হবে ১৮ টাকা ২১ পয়সা। আর একই হারে দাম বাড়লে বাণিজ্যিক গ্রাহককে প্রতি হাজার লিটারের জন্য ৫০ টাকা ৪০ পয়সা হারে পানির দাম গুনতে হবে।

এরআগে ঢাকা ওয়াসা গত দুই বছরে দুবার পানির দাম বাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে ২০০৯ সালের পর ১৩ বছরে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বেড়েছে ১৪ বার। করোনাকালে প্রথম দফায় পানির দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের এপ্রিলে। এরপর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আরেক দফা দাম বাড়ে। এ দুই দফায় আবাসিকে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম বেড়েছিল তিন টাকা ৬১ পয়সা (৩১ শতাংশ)। বাণিজ্যিকে বেড়েছিল চার টাকা ৯৬ পয়সা (১৩ শতাংশ)।
এক প্রশ্নের জবাবে ওয়াসা এমডি বলেন, পানির যেটি প্রকৃত উৎপাদন খরচ, আমরা তার চাইতে কম মূল্যে দিচ্ছি। আন্ডারগ্রাউন্ড পানির উৎপাদন খরচ কম। সার্ফেস ওয়াটারের ক্ষেত্রে পানির উৎপাদন খরচ বেশি। এছাড়া ডিস্টিংশন নেটওয়ার্ক রয়েছে। রাজধানীর অভিজাত, মধ্যম আয় ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য আলাদা আলাদা দাম নির্ধারণের ইচ্ছার কথা জানিয়ে তাকসিম এ খান বলেন, তিনটা ক্যাটাগরিতে পানি দাম নির্ধারণ করতে চাই। আমাদের এটার রিসার্চ চলছে।

তিনি বলেন, সরকারের বহু সংস্থা আছে, যারা সরকারের দেনা পরিশোধ করে না। কিন্তু ওয়াসাই এক মাত্র সংস্থা। যাদের কোনো ঋণ বাকী নাই। ঋণের কোনো কিস্তি বকেয়া নাই।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে ওয়াসার উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক আবুল কাশেম ও বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার রায় উপস্থিত ছিলেন।