বিকলাঙ্গ মানুষ এখন আবার হাঁটছেন

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শরীরের নিম্নাংশ পুরোপুরি বিকলাঙ্গ হয়ে গিয়েছিল মাইকেল রোকাতি’র। কিন্তু তিন বছরের মাথায় তিনি আবার হাঁটতে পারছেন। শরীরচর্চা করতে পারছেন। যুগান্তকারী এক অপারেশনে তিনি সুস্থ হয়েছেন। তার শরীরের মেরুদ-ে ‘ইমপ্লান্ট’ ব্যবহার করে তা সক্রিয় করা হয়েছে। ফলে তিনি দাঁড়াতে পারেন। হাঁটতে পারেন। পারেন অন্য কাজও করতে।

জাপানের টোকিও থেকে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
মাইকেল রোকাতি ২০১৭ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হন। এতে তার শরীরের নি¤œাংশ একেবারে অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু ২০২০ সালে আবার তিনি উঠে দাঁড়িয়েছেন। তার মেরুদণ্ডে ওই অপারেশন করা হয়েছে। এ জন্য তার মাংসপেশিতে পাঠানো হয়েছে বৈদ্যুতিক শক। ব্রেনের অনুকরণে প্রতিক্রিয়া পাঠানো হয়েছে। এর ফলে তিনি সুস্থ হয়েছেন। এর ফলে যাদের মেরুদ-ের মারাত্মক সমস্যা আছে, তাদের চিকিৎসায়ও একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে এই পদ্ধতি।

যেসব মানুষের মেরুদণ্ডে সমস্যা আছে তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চলছে। এতে ব্যবহার করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শক। এই গবেষণায় আছে ২০১৮ সালে একই বিষয়ে গবেষণাকারী সেই টিম, যারা শরীরের নিম্নাংশ বিকল মানুষদের আংশিকভাবে হাঁটতে সহায়তা করছেন।

বৈদ্যুতিক শক দেয়ার পর প্রথম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন রোকাতি। তিনি বলেছেন, এটা এক চরম আবেগের অনুভূতি। গবেষণা করা হচ্ছে তিনজন রোগীর ওপর। তার মধ্যে রোকাতি অন্যতম। এই গবেষণা সোমবার প্রকাশিত হয়েছেন ন্যাচার মেডিসিন জার্নালে। এতে বলা হয়েছে, গবেষণায় এসব রোগীর মাংসপেশিতে ছয় সেন্টিমিটার ‘ইমপ্লান্ট’ ঢোকানোর পর তার ডালপালা যখন চমৎকারভাবে কাজ করতে শুরু করলো, তখন ওই তিনজনই পা বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন।

লুসানে ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের স্নায়ুবিজ্ঞানী জোসেলিন ব্লোচ বলেছেন, আগে আমরা যেসব ইলেকট্রোড ব্যবহার করেছি, তার চেয়ে এসব ইলেকট্রোড ছিল লম্বা ও বড়। এর ফলে নতুন প্রযুক্তিতে আমরা অধিক পরিমাণ মাংসপেশীতে গবেষণা পৌঁছাতে পারবো। এই গবেষণার মাত্র চার মাস পরেই রোকাতি শুধু একটি ফ্রেম নিয়ে হাঁটতে পেরেছেন।