নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করাই আমার মূল কাজ

সিইজিআইস কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় মেয়র 
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করাই আমার মূল কাজ। সাম্প্রতিক দশকে অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে বন্দরনগরী মৌসুমী বৃষ্টিপাত এবং জোয়ারে জলাবদ্ধতার সম্মুখীন হচ্ছে। ৬৩টি খালের কাজ একসাথে শেষ না করলে নগরবাসী জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে পুরোপুরিভাবে মুক্তি পাবে না। বর্তমান পরিস্থিতি উন্নয়ন এবং নগরের অসুস্থ ড্রেনেজ অবকাঠামোকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চসিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিনি মেগাপ্রকল্পের ৩৫টি খালের পাশাপাশি বাকি ২৮টি খালের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করে ডিপিপি তৈরী করার জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশনা প্রদান করেন। আজ বুধবার সকালে টাইগারপাসস্থ অস্থায়ী নগর ভবনে তাঁর দপ্তরে সেন্টার ফর এ্যানভাইরনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস’র কর্মকর্তাদের সাথে ইন্টেলেকচুয়াল সার্ভিস বিষয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম, নগর পরিকল্পনাবিদ আব্দুল্লাহ আল ওমর, সিইজিআইএস’র উপদেষ্টা সামিউল ওয়াহহাব চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আহসানুল্লাহ মিয়া, মোতালেব হোসেন সরকার, মেজর জিয়া, এ্যানটেক কনসালটেন্ট লি: মনোয়ারুল হক প্রমুখ।
মেয়র আরো বলেন, ইতোমধ্যে ড্রেনের মাটি উত্তোলন ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ওয়াসার পাইপ লাইন ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশান লি: গ্যাস লাইন পাইপগুলো ড্রেন বা কালভার্টের নিচ থেকে দ্রুত সরিয়ে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।। সি.এস খতিয়ানে খালগুলোর অস্তিত্ব থাকলেও সেখানে বহুতল ভবনসহ নানা ধরণের স্থাপনা রয়েছে। এই দখলকৃত খালগুলো চিহ্নিত করে এগুলো অবশ্যই পুনরুদ্ধার করা হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি ময়লা, আবর্জনা ও পলিথিন ড্রেনে না ফেলার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি ড্রেনেজ রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার যুগপত উন্নয়ন যা ভবিষ্যতের ক্ষতি থেকে নগরীর নিষ্কাশন এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। নগরীর বাসিন্দাদের ক্রমাগত দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য নিষ্কাশন অবকাঠামোর দ্রুত এবং কার্যকর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
সিইজিআইএস’র উপদেষ্টা বলেন, সিইজিআইএস মেগাপ্রকল্পের ৩৫টি খালের ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক উন্নয়নে কাজ করছে। ডিজিটাল কর নির্ধারণ ও প্রদান ব্যবস্থা, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা চিহ্নিত করণ, ছাদ বাগানের জন্য ভবন চিহ্নিত করণ, ড্রেনেজ ডেভেলপমেন্ট ও মনিটরিং এবং ডাটাবেজ তৈরীর কাজ এবং যোগাযোগ বিষয়ে কাজ করার আগ্রহের কথা মেয়রকে অবহিত করেন। মেয়র তাদের আগ্রহের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখবেন বলে আশ্বস্থ করেন।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হারিয়ে গেলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে:কর আইনজীবী সমিতি কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনায় মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ বার বার আসে না, মুক্তিযোদ্ধরাও আবার নতুন করে জন্ম নেবে না। রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা এখনো বেঁচে আছেন তাদের সম্মান জানাতে হবে। তাদের সম্মান জানানোর মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উজ্জীবিত থাকবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হারিয়ে গেলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে- একথা স্মরণ রেখেই নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। আজ বুধবার সকালে আগ্রাবাদস্থ সিজিও বিল্ডিং-এ কর আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
এড. আলহাজ্ব বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সাবেক সভাপতি এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল ে চৌধুরী, বীরমুক্তিযোদ্ধা এড. আবু মোহাম্মদ হাশেম, সাবেক সভাপতি এড. রতন কুমার রায়, এড. এনায়েত উল্লাহ, মো. আজিজ উদ্দিন (হায়দার), এড. এস.এ আবুল বাশার তালুকদার, এড. মো. আখতার উদ্দিন, এড. আলহাজ্ব আসহাব উদ্দিন, এস.এ হাই ভূইয়া প্রমুখ।
মেয়র আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে ২১ বছর স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি করে পাকিস্তানী ভাবধারা প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নাম চিরতরে মুছে দিতে এমন কোন চেষ্টা বাদ দেয় নাই। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছতে পারে নাই। তারা বুঝতে পারে নাই বঙ্গবন্ধু কাগজে লেখা একটি নাম নয়, বঙ্গবন্ধু বাঙালীর অন্তরে ধারণ করা একটি নাম ও ইতিহাস। ইতিহাসের সন্তানেরা কোনদিন মরে না তারা মৃত্যুহীন। তিনি কর আইনজীবী সমিতি কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করায় তাদের অভিনন্দন জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে এখনো যারা বিতর্ক করেন তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করেন উল্লেখ করে বলেন, তারা বুঝে না ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণ দিয়েছেন তাঁতেই চুড়ান্ত ঘোষণা হয়ে গেছে। এরপর চট্টগ্রাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তৎকালীন আওয়ামী লীঘ নেতা এম.এ হান্নান বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রেরিত স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন। সুতরাং ঘোষণা নিয়ে কোন বিতর্ক করার অবকাশ নেই।
এড.ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা সব সময় জাতীয় বীর। কোন মুক্তিযোদ্ধাকে অসহায় চিহ্নিত করে রিক্সা, ভ্যানগাড়ি ইত্যাদি উপহার দেয়া মানে তাদের অবজ্ঞা করার সামিল। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামীলীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করেছেন। মৃত্যুর পর লাল সবুজের পতাকা দিয়ে গার্ড অব অনার দেয়ার উপর আর বড় সম্মান কিছুই নেই।
সভাশেষে ৬জন কর আইনজীবী মুক্তিযোদ্ধাকে ক্রেস্ট প্রদান করে সম্মাননা প্রদান করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।