আপেলের চালানে ২২ লাখ সিগারেট

আপেলের চালানে এসেছে সিগারেট। ২২ লাখ ১৯ হাজার শলাকা সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ।

এ চালানে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা রুখে দিলেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন রিজভী বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন স্টেশন রোডের মারহাবা ফ্রেস ফ্রুটস নামের একটি প্রতিষ্ঠান আরব আমিরাত থেকে আনা আপেল ঘোষণার চালানে এসব সিগারেট পাওয়া যায়। ৪০ ফুট লম্বা এক কনটেইনার পণ্যের চালানটি খালাসের লক্ষ্যে গত ২০ ডিসেম্বর কাস্টম হাউসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে চট্টগ্রামের পূর্ব মাদারবাড়ীর ১৪৩ ডিটি রোডের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট জিমি এন্টারপ্রাইজ। চালানটির এলসি ইস্যু করা হয়েছে খাতুনগঞ্জের ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পোর্ট কনট্রোল ইউনিট (পিসিইউ) ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রফতানিকারক, রফতানিকারকের ওয়েবসাইট, পণ্য তৈরির দেশ, আমদানিকারকের ব্যবসার ধরন ও ঠিকানা, পণ্যের বিবরণ ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে পণ্য চালানটিতে অসত্য ঘোষণায় পণ্য আমদানির বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা পায়। এ তথ্যের ভিত্তিতে গত ২২ ডিসেম্বর কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে এ চালানের খালাস কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

এরপর চালানটি বন্দরের ভেতরে নিয়ম অনুযায়ী এআইআর টিম পরীক্ষা শুরু করে। শতভাগ কায়িক পরীক্ষার লক্ষ্যে সব পণ্য প্যাকেট কেটে দেখা হয়। এ সময় কনটেইনারটিতে ১ হাজার ১২০টি ফ্রেশ আপেরের কার্টনের মধ্যে ৭৫৪টি কার্টনে আপেলের নিচে ইনার কার্টনে লুকানো বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৪৮০ শলাকা মন্ড ব্রান্ডের, ১৪ লাখ ৮ হাজার ৭২০ শলাকা ইজি ব্রান্ডের এবং ১ লাখ ১৮ হাজার ৮০০ শলাকা ওরিস ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। এসব সিগারেটের আনুমানিক দাম ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। যার মাধ্যমে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাওয়া যায় ৩৬৬ কার্টনে ১৫ হাজার ৯৮ কেজি ফ্রেস আপেল এবং ২ হাজার ৪৮৮ কেজি জিপি শিট।

ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন রিজভী জানান, এ চালানে শর্তসাপেক্ষে আমদানিযোগ্য ও উচ্চ শুল্কের পণ্য সিগারেট আমদানি করে আনুমানিক ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকার সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও কর্মকর্তাদের আন্তরিকতায় এ অপচেষ্টা নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে। এ ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন কাস্টম হাউসের কমিশনার মহোদয়। কাস্টম অ্যাক্ট ১৯৬৯ এবং প্রচলিত অন্যান্য আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে প্রক্রিয়া চলছে।