শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা

সশস্ত্র বাহিনী দিবসে শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২১ নভেম্বর) সকাল আটটায় সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং সোয়া আটটায় প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর।

এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পরে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তিন বাহিনী প্রধান সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে। প্রতি বছর দিনটিকে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ পালন করা হয়।

আইএসপিআর জানায়, ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২১’ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। গণভবন থেকে ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানটিতেও গণভবন থেকে ভিডিও টেলিকনফারেন্সে যুক্ত হবে প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনী প্রধান এবং বিমান বাহিনী প্রধান স্ব-স্ব বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন।

এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান ২৩ নভেম্বর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, তাদের উত্তরাধিকারীদের অনুরূপ সংবর্ধনা প্রদান করবেন।

ঢাকা ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

এদিকে, দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ, স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ ২১ নভেম্বর বেলা ২ টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাটে অবস্থান নোঙ্গরকৃত অবস্থায় রাখা হবে।

দিবসটি উপলক্ষে শনিবার রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে ২০ নভেম্বর (শনিবার) বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।

২১ নভেম্বর (রবিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ বেতার ‘বিশেষ দূর্বার’ সম্প্রচার করা হবে।

টেলিভিশনের জন্য নির্মিত ‘‘বিশেষ অনির্বাণ’’ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহেও পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচার করা হবে।

সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার (অনলাইন ভিত্তিক) আয়োজন করা হয়েছে।