পূজামণ্ডপ মন্দিরে বর্বর সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও সমাবেশে সংবিধানে প্রদত্ত ধর্মচর্চার অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ করা, সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুতবিচার আইনে শাস্তি নিশ্চিত করা এবং এ যাবত সংঘটিত সব সাম্প্রদায়িক হামলার শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানানো হয়।
শনিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে নগরের চেরাগি চত্ত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান বলেন, এ যাবত যত ঘটনা ঘটেছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করে প্রকৃত দোষীদের বিচার করতে হবে। সংবিধান যে অধিকার দিয়েছে তা নিশ্চিত করে সব ধর্মের মানুষের ধর্ম পালনের অধিকার দিতে হবে। বাংলাদেশকে সম্প্রীতির বাংলাদেশ করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যেন জীবন নির্বাহ করতে পারে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। দ্রব্যমূল্য কমিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফেরাতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনসুর মাসুদ বলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানদের যখন ধর্মীয় অনুষ্ঠান থাকে তখন সবসময় সম্মান জানিয়েছি। সম্প্রীতি বজায় রেখে এদেশে বসবাস করে আসছি। হিন্দু মুসলমান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ করেছি। কিন্তু সাম্প্রদায়িক শক্তি বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। কদিন আগে দুর্গোৎসবে হামলা হলো। সরকার সঙ্গে সঙ্গে বলল এসব বিএনপি জামায়াতের কাজ। তাহলে প্রশ্ন করতে চাই, বিএনপি জামায়াত যদি করে তাহলে সরকার ব্যবস্থা নিল না কেন?
জেলা কমিটির সদস্য দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে আমাদের পাকিস্তানের কবলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। মুসলমান হয়ে তারা মুসলমানদের ওপর যে নির্যাতন চালায় তার বিরুদ্ধে জাতি গর্জে উঠেছিল। আজ জাতির পিতার কন্যার শাসনামলে সাম্প্রদায়িক কারণে মানুষের ওপর হামলা হচ্ছে। মানুষ তার ধর্ম পালন করতে পারছে না। ভাবতে হবে, যদি আজ আমার হিন্দুর ঘরে জন্ম হতো তাহলে আমাদের পরিস্থিতি কী হতো। জঙ্গিগোষ্ঠীকে সমূলে উৎখাত করতে হবে। সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে যেন এদেশে বসবাস করতে পারে।
প্রবীণ শ্রমিক নেতা আবদুল খালেক বলেন, এদেশের শ্রমিক শ্রেণি চায় সব ধর্মের মানুষ শান্তিতে থাকুক। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আর কেউ ঘটনা ঘটানোর সাহস পেত না। প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দিন। মানুষ চরম দুরবস্থায় আছে। করোনার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি। নিত্যপণ্যের দাম সীমার বাইরে। গণপরিবহন বন্ধ। পাটকলগুলো একযোগে বন্ধ হলো। বাজারে আগুন। যে আগুনে জ্বলছে কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ। মেহনতি মানুষের জীবিকার ও সব সম্প্রদায়ের মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা চাই।
সমাবেশে বক্তব্য দেন যুব মৈত্রী চট্টগ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খোকন মিয়া এবং ছাত্র মৈত্রীর জেলা কমিটির আহ্বায়ক আলাউদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোক্তার আহমেদ, জেলা কমিটির সদস্য শামসুল আলম, সুপায়ন বড়ুয়া, আবু সৈয়দ বলাই, অধ্যাপক শিবু কান্তি দাশ প্রমুখ।










