গান, আবৃত্তির মধ্য দিয়ে সিআরবি রক্ষার দাবি

‘সবুজ আন্দোলন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

গান, কবিতা আবৃত্তি, কথামালার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন মধ্য দিয়ে সিআরবি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিকবৃন্দ। সিআরবিতে স্থাপনা নির্মাণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আপামর মানুষ, বিভিন্ন সেবাসংস্থা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুস্থ ধারার প্রগতিশীল ব্যক্তি সকলেই। শত বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের মধ্য দিয়ে পুরো রেলের জায়গাকে আত্মসাৎ করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করে চট্টগ্রামের শিল্পী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা প্রাণ-প্রকৃতিতে ভরপুর চট্টগ্রামের ফুসফুস ধ্বংসের চক্রান্ত রুখে দাঁড়াতে মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র, শ্রমিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার ব্যক্তিদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন। আজ শুক্রবার (২২অক্টোবর) সিআরবি রক্ষায় আন্দোলনকারী সংগঠন নাগরিক সমাজের সমাবেশে বক্তারা এই আহবান জানান। সমাবেশের ফাঁকে ফাঁকে গান-আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়। শিল্পীরা একে একে পরিবেশন করেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এবং বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কালজয়ী সব গান। পরিবেশন করা হয় ‘বাংলার হিন্দু বাংলার বৌদ্ধ’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছ’, ‘নোঙর তোল তোল’, ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’, ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’সহ কারজয়ী অগণিত গান। কবি ও শিশুসাহিত্যিক তানভীর হাসান বিপ্লব সম্পাদিত যৌথ কাব্য সংকলন “সবুজ আন্দোলন ” এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বিকেল সাড়ে চারটায় অনুষ্ঠিত হওয়া সঙ্গীতানুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশন করে মঞ্চ মাতানো জাগরণের কণ্ঠশিল্পী ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর যুগ্ম সম্পাদক হাসান জাহাঙ্গীর। সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, শতবছরের ঐতিহাসিক সিআরবি আসাম বেংগল রেলওয়ের প্রধান কার্যালয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই সিআরবি ধ্বংস করে বাণিজ্যিক বেসরকারি হাসপাতাল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। সিআরবিতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ১০জন শহীদের কবরস্থান রয়েছে। বক্তারা আরও বলেন, সরকারি সম্পত্তি লুটপাট করতেই বেনিয়া গোষ্ঠী সিআরবিতে হাসপাতাল করতে চায়। সিআরবি রক্ষার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার আপামর জনসাধারণ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুস, অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কবি হোসাইন কবির, এডভোকেট এইস এম জিয়া উদ্দিন, শফিকুল আলম হেলাল, মিঠুল দাশ গুপ্ত, সরোয়ার বাবুল, মোরশেদ চৌধুরী। আবৃত্তি শিল্পী দিলরুবা খানমের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঋত্বিক নয়ন, বনবিহারী চক্রবর্তী, মাহবুব রহমান, গোলাম মুশতাক আহমেদ, হুমায়ুন কবির মাসুদ, কবি মিনু মিত্র, তাপস দে, আকরাম হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন জাফর, প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠে অংশ নেন শিশুসাহিত্যিক ইফতেখার মারুফ, কবি রাসূল বড়ুয়া, গল্পকার রুনা তাসমিনা, বিআরএফ সিদ্দিকা, নান্টু বড়ুয়া, আজিজা রুপা, সালাম সৌরভ, তানজির শিকদার, রিশাদ তানজির।