প্রকৌশলী আশ্রাফুজ্জামান পলাশের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

জনতার টাকায় বেতন নিয়ে জনপ্রতিনিধির সাথে বেয়াদবি বরদাস্ত করা হবে না -রিয়াজ হায়দার

চট্টল মেয়রের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণকারী জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম সার্কেলের সহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান পলাশকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যাহার তার নিঃস্বর্থ ক্ষমা প্রার্থনা না করলে বৃহত্তর কর্মসূচীর আলটিমেটাম দিয়েছেন চট্টগ্রামের পেশাজীবী-নাগরিক সংগঠক, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ।
তিনি ‘মেয়রের সঙ্গে ঐদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদে’ মঙ্গলবার বিকেলে ইয়াং ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে প্রকৌশলী- জনতার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এই আলটিমেটাম দেন ।
সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ঈর্ষান্বিত হয়ে,বিশেষ করে চট্টগ্রাম শহরের মেয়র জননেতা আ জ ম নাছির উদ্দিনের সৎ পরিচ্ছন্ন ও নিবেদিত ভুমিকায় বদলে যাওয়া সেবাচিত্র দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে আসন্ন চসিক নির্বাচনকে ঘিরে মহল বিশেষ ষড়যন্ত্র করছে।এই ষড়যন্ত্র মূলত মহান মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারা জীবনের সাধনা এদেশের তৃণমূল মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী।অভিযুক্ত প্রকৌশলী এই ষড়যন্ত্রের কুশীলব হিসেবে কাজ করছেন। পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন নেয়া কোন সরকারি কর্মচারী জনপ্রতিনিধির সাথে বেয়াদবি করবেন, চট্টগ্রামবাসী তা বরদাস্ত করবে না।মেয়রের সাথে উগ্র অশোভন আচরনকারীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিও করেছেন এই পেশাজীবী নাগরিক সংগঠক ।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রকৌশলী মো. হারুন, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন, প্রকৌশলী আবু ছালেহ, যুবনেতা ফারুক আহমেদ ও সুমন দেবনাথ,
জাবেদুল আলম সুমন, সাংস্কৃতিক সংগঠক মোহাম্মদ খোরশেদ প্রমুখ। এতে চসিক কর্মচারিরাও সংহতি প্রকাশ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিটি মেয়রের সম্মান ক্ষুন্ন করতে একটি পক্ষ এ সব কাজ করছে। মূলত তিনি সেই প্রকৌশলীকে মারধর করেননি। বরং নগরবাসীর প্রয়োজনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য সড়ক সম্প্রসারণের তাগাদা দিয়েছেন।
চসিক সূত্রে জানা যায়, জাইকার অর্থায়নে নগরীর হালিশহরে পোর্ট কানেকটিং সড়কে জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ সংস্কারের কাজ করছে চসিক। প্রকল্পের অধীনে হালিশহরের বরফকল এলাকায় ড্রেনসহ সড়ক সোজা করতে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রায় ৫০ ফুট জায়গা দখলে নেয় চসিক। এ নিয়েই চসিক-গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বিরোধ। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গৃহায়নের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শামসুল আলমের নেতৃত্বে ছয়জনের একটি টিম পূর্ব নির্ধারিত সময় মতে গত সোমবার সন্ধ্যায় নগর ভবনে যান।
কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘ওই প্রকৌশলী মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে বেয়াদবি করেছে। তখন আমি তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে তাকে টেনে বাইরে নিয়ে যাই। কিন্তু মারধর করিনি। উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করেছি। কিন্তু গায়ে হাত তুলিনি।’
নগরজুড়ে আলোচনায় শীর্ষে আছে ঘটনাটি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্মসূচি পালন করেছেন চসিক গতকাল মঙ্গলবার কর্মসূচি পালন করেন। আজ বুধবার চসিক কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন করবেন সকাল নয়টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে।
চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন গতকাল দুপুরে নগর ভবনে বলেন, ‘জনস্বার্থে উক্ত সহকারী প্রকৌশলীকে কিছু কথা বলেছি। কিন্তু তাকে মারধরের মত মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাছাড়া তখন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি কথা বলেননি, সহকারি প্রকৌশলী কথা বলছেন। তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলায় একটু বকাঝকা করেছি।’ সিটি মেয়র বলেন, ‘আমরা সড়ক সম্প্রসারণ করছি জনগণের জন্য। তাই প্রয়োজনীয় জায়গায় কাজ করা হচ্ছে। এখানে ভুল বুঝাবুঝির কিছু নেই। এ ব্যাপারে আমরাও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে বিষয়টি আমি মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করব। তবে আমাদের প্রকল্পের কাজ চলবে।’ তিনি বলেন, ‘যে জায়গাটি নিয়ে বিরোধ, সেখানকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে চসিক। এখন গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ সেখানে অস্থায়ী বাজার বসাতে চায়। কিন্তু তারা তো বাজার বসাতে পারে না। তাছাড়া রাস্তা ও নালা যদি বাঁকাভাবে নির্মাণ করা হয়, তাহলে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকেই যাবে। এ জন্য জায়গাটির ওপর সোজাভাবে রাস্তা ও নালা করার জন্য কাজ করছে চসিক। এতে বাধা দেয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।’