পরীমনির মাথায় সাদা ওড়না, চোখে মুখে ছিল খুশির ঝিলিক

মাদক মামলায় ২৭ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। কারাগারের গেটে এসে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে হাসিমুখে জনতার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। নিজেই স্মার্টফোন হাতে নিয়ে সেলফি তোলেন। এসময় তার হাতে মেহেদির রঙে লেখা ছিল ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’।
এর আগে সকাল সোয়া নয়টার দিকে গাজীপুর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী ও পরীমনির খালু জসিম উদ্দিন কাশিমপুর কারাগারে প্রবেশ করেন। পরীমনির বের হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকেই কারাগারের গেটে নানা শ্রেণি-পেশার নানা বয়সী লোকজন বিশেষ করে তরুণ ও যুবকদের ভিড় জমে।
সকাল সাড়ে নটার পরপর কারাগার থেকে বের হয়ে একটি সাদা গাড়িতে চড়ে তার খালু আইনজীবীর সঙ্গে কারাগারের প্রধান ফটকে আসেন পরীমনি। তিনি সাদা পোশাকে ছিলেন এবং তাকে বহনকারী গাড়ি থেকে একটু বের হয়ে উপস্থিত ভক্তদের হাত না নেড়ে শুভেচ্ছা জানান এবং ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলতে দেখা যায়।

পরীমনির মাথায় এ সময় সাদা ওড়না প্যাঁচানো ছিল। তার চোখে মুখে ছিল খুশির ঝিলিক। এ সময় গেটে লেগে থাকা উৎসুক জনতার চোখে মুখে খুশির ঝিলিক ছড়িয়ে যায়। পর্দায় দেখা এই নায়িকাকে অনেকেই কাছে থেকে এক নজর দেখতে পেয়ে পুলকিত হয়েছেন। পরের সঙ্গে সঙ্গে তারাও হাত নেড়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বললেও হাত নেড়ে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর তিনি বনানীর বাসার উদ্দেশে রওনা হন।
এর আগে পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী জানান, গতকাল জামিন মঞ্জুর হলেও জামের নামার কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছাতে রাত হয়ে যাওয়ায় রাতে আর বের হওয়া সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে পরীমনির জামিন আদেশ দেন। তিন কারণ বিবেচনায় পরীমনিকে জামিন দেয়া হয়েছে। যেহেতু পরীমনি একজন চিত্রনায়িকা এবং একজন নারী। তাছাড়া সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত প্রীতিলতা নামক একটি চলচ্চিত্রে তার অভিনয়ের শিডিউল চলছে। এসব বিষয় বিবেচনায় তদন্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) দাখিল পর্যন্ত জামিনের আদেশ দেন আদালত।
গত ১৯ আগস্ট পরীমনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম। এর আগে গত ১০ই আগস্ট পরীমনি ও আশরাফুল ইসলাম দীপুর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস। তার আগে ৫ আগস্ট পরীমনি ও দীপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ।
মাদক মামলায় গত ১৩ই আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। কারা সূত্র জানায়, পরীমণিকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে (রজনীগন্ধা ভবন) রাখা হয়।
গত ৪ আগস্ট রাতে প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র‌্যাব। এ সময় পরীমণির বাসায় বিভিন্ন মাদক পাওয়া গেছে বলে জানায় র‌্যাব। ৫ই আগস্ট র‌্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পরীমনি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে।